সেই ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ সৈকতই হলেন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন তানভীর হাসান সৈকত। তিনি করোনার সময়ে মানবিক কাজের জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ (বাস্তব জীবনের নায়ক) উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে এ কমিটি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ কমিটির সভাপতি হয়েছেন মাজহারুল কবির শয়ন।
আরও পড়ুন >>> ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি শয়ন, সম্পাদক সৈকত
সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়া সৈকত থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী হিসেবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। তার বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলায়। এর আগে তিনি ছাত্রলীগের উপ-সমাজসেবা সম্পাদক এবং সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
করোনাকালে কঠোর লকডাউনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ছিন্নমূল মানুষের আহারের ব্যবস্থা করে আলোচনায় আসেন সৈকত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ১২১ দিন ধরে অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছিলেন তিনি। অসহায় মানুষের মাঝে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করেছেন। এসবের জন্য তিনি জাতিসংঘের রিয়েল হিরো উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন। পেয়েছিলেন মানবিক ছাত্রনেতার তকমা।
এছাড়া তিনি দেশের বিভিন্ন বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া, ঈদে দরিদ্র মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা, রোগী পরিবহনে অ্যাম্বুলেন্স, বিনামূল্যে শিশুখাদ্য (গুড়া দুধ) পৌঁছে দেওয়া, নিরক্ষর, সুবিধাবঞ্চিতদের খাদ্যের বিনিময়ে ভ্যাক্সিন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম, বন্যাকবলিত, ঘূর্ণিঝড়কবলিত জনপদে গৃহ নির্মাণ, অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা কিংবা শিক্ষার্থীবান্ধব ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার জন্য বেশ প্রশংসিত হয়েছেন সৈকত।
আরও পড়ুন >>> ছাত্রলীগ : আদর্শিক রাজনীতির ধারক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা গণরুম সংকট সমাধানেও শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে আন্দোলন করেছেন তানভীর হাসান সৈকত। উপাচার্যের বাসভবনে সামনে অবস্থান, মানববন্ধন, আল্টিমেটামসহ নানান কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। নিজের দায়বদ্ধতা থেকে হলের বৈধ সিট ছেড়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গণরুমেও থেকেছেন ডাকসুর তৎকালীন এই সদস্য।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে একটি উন্মুক্ত লাইব্রেরি নির্মাণ করেছেন তিনি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুইটি প্রকাশনা, কয়েকটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন তিনি। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সর্ব মহলে উদ্যোগটি প্রশংসিত হয়েছে।

ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায়ও তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, করোনার সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কাজ করেছে, আমি নিজেও করেছি। আমরা এখন যে সময়টাতে নেতৃত্ব পেয়েছি এটা একটা ক্রাইসিস মোমেন্ট। যেহেতু করোনা পরবর্তী বৈশ্বিক মন্দা চলছে। শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করাসহ ক্যাম্পাসকে স্থিতিশীল রাখতে আমরা কাজ করব। যাতে শিক্ষার্থী নির্বিঘ্নে তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন >>> ছাত্রলীগ নিয়ে এত সমালোচনা কেন?
এই কমিটিতে সভাপতি হয়েছেন মাজহারুল কবির শয়ন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নাট্য-বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এর আগে ডাকসুর সাহিত্য সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
এইচআর/এমএ