ঝালমুড়ি বিক্রেতা খালাকে ভ্যান উপহার দিলেন কুবি শিক্ষার্থীরা

অভাবের সংসার শুকলা রাণী ত্রিপুরার। তিন সন্তানের মধ্যে একজন পড়েন পঞ্চম শ্রেণিতে আরেকজন তৃতীয় শ্রেণিতে। আর একজনকে সঙ্গে নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ক্যাম্পাসের ভেতরে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন তিনি। তবে সেই ঝালমুড়ি বিক্রির জন্য তার ছিল না নির্দিষ্ট কোনো ভ্যান গাড়ি, ছিল না প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
তার এই আর্থিক অবস্থার কথা জেনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সুপন সূত্রধরের উদ্যোগে শুকলা রাণীকে একটি ভ্যানগাড়ি উপহার দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় সুপন সূত্রধর ভ্যানের চাবি তুলে দেন শুকলা রাণীর হাতে।
ভ্যানগাড়ির চাবি হাতে আবেগ আপ্লুত হয়ে শুকলা রাণী ত্রিপুরা বলেন, আগে আমি বাইরে বসে জিনিস বেছতাম (বিক্রি)। এখন এই গাড়িতে বেছতে পারব। আসলে আমি খুবই খুশী এই মামাদের প্রতি। এই সময়ে নিজের সন্তানেরাও এমন করে না যা এই মামারা আমার জন্য করেছে। আমি এখানে যা বেছি তা দিয়ে সংসার চালাই আর পোলারে (ছেলেকে) লেখাপড়ার খরচ দেই। আগে বেশি বেছতে পারতাম না, আশা করতাছি এখন আগের চাইতে বেশি বেছতে পারব। আমি মামাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
সুপন সূত্রধর বলেন, আমি এই খালাকে দেখতাম সে ক্যাম্পাসের ভেতরে সিঁড়িতে বসে ঝালমুড়ি বিক্রি করছে। ভাবলাম উনাকে যদি একটি ভ্যানের ব্যবস্থা করে দেওয়া যায় তাহলে আর বাইরে বসে এভাবে বিক্রি করতে হবে না। সেখান থেকেই উদ্যোগ নেই টাকা উঠানোর। বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা আমাকে সহযোগিতা করেছে। যার ফলে আমরা এই ভ্যানটি ক্রয় করে এই খালাকে দিতে পেরেছি। আসলে আমাদের চারপাশের এই মানুষগুলোকে সহযোগিতা করা উচিত। সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত।
ভ্যানগাড়ি ক্রয়ের জন্য প্রায় একমাস ধরে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করা হয়। টাকা সংগ্রহের জন্য একটি মানবিকতা সহযোগিতায় তদারকি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে ছিলেন সুপন সূত্রধর, সাজ্জাদ বাশার, গোলাম কিবরিয়া, হাসানুর রহমান, ঐশি ভৌমিক, দীপ চৌধুরী, আসিফ রাব্বি, তরিকুল ইসলাম এবং ইশতিয়াক আহমেদ।
জাভেদ রায়হান/আরকে