ঢাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২০

Dhaka Post Desk

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:০৮ পিএম


ঢাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২০

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলের কক্ষ দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টার দিকে ওই হলের কক্ষ দখলকে কেন্দ্র করে রাতভর সংঘর্ষ হয়।

হল ছাত্রলীগের একাধিক সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের অনুসারীদের সঙ্গে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমের কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় বিব্রত হয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বলছে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে জরুরি সভা ডেকেছে হল প্রশাসন।

হল ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী সাব্বির অনিককে ৫০০৬ নং রুম থেকে বের করে সেটিতে তালা লাগিয়ে দেন সাদ্দাম ও ইনানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ওই হলের নেতাকর্মীরা। পরে সৈকতের নেতাকর্মীরা তালা ভেঙে রুমে প্রবেশ করেন। এসময় সৈকতের অনুসারীরা হল ছাত্রলীগের সভাপতির রুম ভাঙচুর চালান। এরপর দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সৈকতের গ্রুপের ৯ জন এবং সাদ্দাম-ইনানের গ্রুপের ১০-১২ জন আহত হন।

dhakapost

সৈকতের অনুসারীদের মধ্যে আহত জিওগ্রাফি বিভাগের ইমামুল হাসান, এপ্লাইড ম্যাথের মাহমুদুল হাসান, পারভেজ, রিদওয়ানুর, মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের কল্লোল, কাউসার ও সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের শাহেদের নাম জানা গেছে। 

অন্যদিকে সাদ্দাম-ইনান গ্রুপের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফিরোজ কবীর, ফলিত গণিত বিভাগের ফুয়াদ বিন রায়হান, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মো. জালাল মিয়া, উদ্ভিদ বিজ্ঞানের তানজিন আলম, পরিসংখ্যান বিভাগের সাদেক হোসেন, ভূতত্ত্ব বিভাগের আশরাফুলসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মুর্তজা মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হলে ফিরেছেন।

ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ফজলুল হক হলের দক্ষিণ ভবনে সিট সংক্রান্ত কারণে রাত সাড়ে ১২টার দিকে দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা হয়। আমি আমার রুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ১০ থেকে ১২ জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে রাতের খাবারের আয়োজন করি। খাওয়া শেষে সবাই রুমে অবস্থান করছিলাম। রাত দেড়টার দিকে ৮ থেকে ১০ জন অতর্কিতভাবে দেশীয় অস্ত্রসহ আমার রুমে হামলা করে।

তিনি বলেন, হামলা করে দ্রুতই পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলি। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈকতের অনুসারী। সৈকতের নির্দেশে এ ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে শহীদুল্লাহ হল ছাত্রলীগের সৈকতের অনুসারীরাও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ১২ জন শিক্ষার্থী আহত হন।

dhakapost

এ বিষয়ে তানভীর হাসান সৈকত ঢাকা পোস্টকে বলেন, কমিটি হয়েছে মাত্র এক মাস হয়েছে। আমার অনুসারী বলতে কিছু নেই। আমার নির্দেশে কোনো ঘটনা ঘটেনি। জড়িতদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগে কারো অনুসারী কিংবা দলে বিভক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। এ ঘটনায় আমরা বিব্রত। ইতোমধ্যে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রশাসনকে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আমরাও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিভাজনের রাজনীতিতে আমাদের সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আমরা রাজনীতিটাকে স্মার্ট করতে চাই, শিক্ষার্থীবান্ধব করতে চাই। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি হলের সুন্দর পরিবেশ ও অ্যাকাডেমিক পরিবেশের ব্যত্যয় ঘটে এমন কর্মকাণ্ড করা যাবে না। এ ধরনের কোনো কিছু ঘটলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সার্বিক বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ মো. মাসুম বলেন, ঘটনার ব্যাপারে আমরা অবহিত হয়েছি। হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। সভা থেকে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।

এইচআর/কেএ

Link copied