নির্যাতনের কথা মিডিয়াকে জানানোয় ছাত্রীকে সতর্ক করল কলেজ প্রশাসন

রাজধানীর বকশীবাজার এলাকার বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের আবাসিক ছাত্রাবাসে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ভুক্তভোগী ছাত্রী কলেজ কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে সরাসরি মিডিয়াকে জানিয়েছেন এমন অভিযোগে খোদ নির্যাতনের শিকার ছাত্রীকেই সতর্ক করেছে কলেজ প্রশাসন।
রোববার (১২ মার্চ) ভুক্তভোগীকে কলেজের আবাসিক ছাত্রাবাসের হোস্টেল কর্তৃপক্ষ একটি ‘সতর্কীকরণ নোটিশ’ পাঠিয়ে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়।
ওই চিঠির একটি কপি ঢাকা পোস্টের হাতে এসেছে। কলেজের হোস্টেল সুপার অধ্যাপক নাজমুন নাহারের সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৪ মার্চের ঘটনা কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে সরাসরি মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করায় ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হলো। ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে হোস্টেল সুপার অধ্যাপক নাজমুন নাহার বলেন, এটা (সতর্কীকরণ চিঠি) তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্ত। আমার একক কোনো সিদ্ধান্ত নয়। আমি এ বিষয়ে কথা বলতে পারব না। আপনি আমাদের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
জানতে চাইলে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিকুন নাহার বলেন, আমরা তো এখানে আছি। হোস্টেল সুপার আছেন, অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার আছেন। যেকোনো কিছু হোক না কেন আগে কর্তৃপক্ষ জানাবে। আমরা যদি ব্যর্থ হই তখন আপনারা (মিডিয়া) আসবেন। সেজন্য বলছি আমাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করতে। বিষয়টা তেমন কিছু না। ঠিক আছে আপনারা আমাদের বিষয়ে দায়িত্বশীল খোঁজ-খবর নিচ্ছেন, কিন্তু এই ব্যাপারগুলো আমাদের হোস্টেল সুপারকে ম্যানেজ করতে দেন না। আমরা আছি তো।
গত ৪ মার্চ (শনিবার) দিবাগত রাত ১২টার দিকে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের নতুন হলের (ফাতেমা হল) দ্বিতীয় তলার ২০০০৭ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ উঠে। অভিযুক্তের নাম হাবীবা আক্তার সাইমুন। তিনি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, তিনি কলেজের ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। দীর্ঘদিন ধরে রুম দখলের জন্য কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবীবা আক্তার সাইমুন চেষ্টা করে আসছিল। এ নিয়ে বেশ কয়েক বার বাদানুবাদও হয়েছে। এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় ওইদিন দিবাগত রাতে জোর করে তার পছন্দের শিক্ষার্থীদের এই কক্ষে উঠিয়ে দিয়ে অন্যদের কক্ষ পরিবর্তন করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ভুক্তভোগী ছাত্রী তার কথা মতো কক্ষ পরিবর্তন করতে না চাইলে নির্যাতন করে জোর করে তার বিছানাপত্র ফেলে দেওয়া হয়।
ওই ছাত্রী বলেন, এমন ঘটনায় মানসিকভাবে আমি প্রচন্ড ভেঙে পড়েছি। আমি বিষয়গুলো আগেই কলেজ প্রশাসনকে জানিয়েছে। যেখানে কলেজ প্রশাসন আগামীকাল (রোববার) এ বিষয়টি নিয়ে বসবেন, তার আগেই তিনি (হাবিবা আক্তার সাইমুন) তার অনুসারীদের দিয়ে জোরপূর্বক এমন কাজ করেছেন। শেষ পর্যন্ত তারা ওই কক্ষটি দখল করেই নিয়েছে। অবশ্য এ ঘটনা তদন্তে পরবর্তীতে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
আরএইচটি/এসএসএইচ/