‘মোশতাক-জিয়া পাকিস্তানের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করেছিলেন’

Dhaka Post Desk

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

৩০ মার্চ ২০২৩, ০৮:৩১ পিএম


‘মোশতাক-জিয়া পাকিস্তানের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করেছিলেন’

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘খুনি মোশতাক ও জিয়া মহান মুক্তিযুদ্ধকে বানচাল করার মাধ্যমে পাকিস্তানের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করেছিলেন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে আপস করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছিলেন।’

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের উদ্যোগে ‘খুনি মোশতাক ও জিয়ার অবৈধ সরকারের কুখ্যাত ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স : পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন এক কালো আইন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) মফিজুল হক সরকার, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার বক্তব্য রাখেন।

মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মাস্টামাইন্ড খুনি জিয়া-মোশতাক চক্রের অবৈধ ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বা দায়মুক্তি অধ্যাদেশ কি এবং কখন জারি হয়েছিল সেটা নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যার পর ক্ষমতায় বসে সামরিক আইন জারি করেন খন্দকার মোশতাক আহমেদ, যার পেছনে ছিলেন সেনাবাহিনীর একদল বিপথগামী কর্মকর্তা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে হত্যাকারী খন্দকার মোশতাক আহমেদের হত্যার দায় থেকে মুক্তি বা অব্যাহতি প্রয়োজন হয়ে পড়ে। নইলে এদের বাঁচার কোনও উপায় ছিল না। সেজন্য জারি করা হয় পৃথিবীর ইতিহাসের এক নজিরবিহীন কালো আইন- ‘ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স’ বা ‘দায়মুক্তি অধ্যাদেশ’।

তিনি বলেন, 'ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সের সঙ্গে মেজর জেনারেল জিয়ার সংশ্লিষ্টতা নানা তথ্য-উপাত্তের মধ্য দিয়ে এটি আজ প্রামাণিত যে, এই অধ্যাদেশ জারির পেছনে তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের সরাসরি জড়িত ছিল। সামরিক অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল নিজেই রাষ্ট্রপতির পদে আসীন হয়ে জিয়াউর রহমান ওই অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল কুশীলব জিয়া-মোশতাক চক্রের মুখোশ জাতির সামনে উন্মোচন করার জন্য অবশ্যই কমিশন গঠন করতে হবে।’

প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস একসূত্রে গাঁথা। ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের ইতিহাস ও অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, এরকম মহান নেতার দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নত দেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।’

সভাপতির বক্তব্যে আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘কুখ্যাত ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করেছিলেন খন্দকার মোশতাক আহমেদ এবং এটিকে পাকাপোক্ত রূপ দিয়েছিলেন অবৈধ সামরিক শাসক খুনি জিয়াউর রহমান। ইনডেমনিটির উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার বন্ধ করে দেওয়া। সমগ্র বাংলাদেশ এই কালো আইনের ওপর পাঁচ লাখ লিফট তৈরি করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।’

এইচআর/এসএম

Link copied