রাবি শিক্ষার্থীর ভিন্নধর্মী উদ্যোগ

ছেলেদের পাঞ্জাবি, প্যান্ট ও শার্টসহ মেয়েদের জন্য রয়েছে টাঙ্গাইলের শাড়ি। লম্বা একটি টেবিলের উপরে সাজানো রয়েছে প্রায় ১৯ ধরনের পোশাক। ঈদ সামনে রেখে ক্যাম্পাসেই খোলা আকাশের নিচে এমন অস্থায়ী কাপড়ের দোকান দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী শফি আলম।
শফি আলমের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর উপজেলার পাখিওড়া গ্রামে। প্রথমে আমের ব্যবসা করলেও এখন বিক্রি করছেন পোশাক। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় প্রশাসনিক ভবনের সামনে থাকা তার অস্থায়ী দোকানে মিলবে ২২০ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত দামের পোশাক। আর তার দোকান ঘিরে তৈরি হয় শিক্ষার্থীদের জটলা।

এ বিষয়ে শফি আলম বলেন, ঈদ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে দোকান বসিয়েছি। গত বছরও আমি দোকান বসিয়েছিলাম। সেবার ভালো সাড়া পেয়েছিলাম। যার কারণে এবারো দোকান দিয়েছি। গত ২৬ মার্চ থেকে দোকান চালু করেছি। এ বছরও সবার কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি। ক্যাম্পাস যতদিন চালু থাকবে ততদিন দোকানও চালু রাখব।
তিনি জানান, খুব অভাব-অনটনের মধ্যে দিয়ে লেখাপড়া করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর বাড়ি থেকে খুব বেশি টাকা দিতে পারতো না। প্রাথমিক অবস্থায় নিজের খরচ চালাতে বেছে নেন টিউশনি। মোটামুটি ভালোই চলছিল। মাঝপথে শুরু হয় করোনা। ক্যাম্পাসও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে টিউশনিও বন্ধ হয়। অর্থ সংকটে পড়ায় আমের মৌসুমে আমের ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। অনলাইনে অর্ডার নিয়ে আম বিক্রি শুরু করেন। আমের মৌসুম শেষ হওয়াতে ব্যবসাও শেষ হয়ে যায়। পরে আম বিক্রির গচ্ছিত টাকা দিয়ে গত বছর রোজার সময় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন রকমের পোশাকের দোকান দেন। গত বছর প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার পোশাক বিক্রি করেন বলে জানান শফি আলম।

শফি আরও বলেন, গতবারের মতো এবারো ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমার এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অনেকেই আসছেন পোশাক কেনার জন্য। অনেকেই পোশাক নিচ্ছেন। বেশকিছু শিক্ষক আমাকে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য উৎসাহ দিচ্ছেন। যেটা খুবই ভালো লাগছে। গত ২৬ মার্চ স্টল দিয়ে এরই মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি কাপড় বিক্রি করেছি। গত এক সপ্তাহে ২শো’র বেশি পাঞ্জাবি বিক্রি হয়েছে। নতুন করে আবার ৭৫ হাজার টাকার পোশাক কিনে এনেছি।
ঈদ সামনে রেখে সব ধরনের পোষাকই বিক্রি হচ্ছে তার দোকানে। তবে বেশি বিক্রি হচ্ছে পাঞ্জাবি, পায়জামা এবং শার্ট। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী পাঞ্জাবি কিনছেন। তবে যথাসম্ভব সীমিত লাভে পোষাক বিক্রি করছেন বলেও জানান তিনি।
জুবায়ের জিসান/এবিএস