ঢাবির সিনেটে গেস্টরুম নির্যাতন নিয়ে হট্টগোল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশন চলাকালীন সিনেট সদস্য ও বিএনপিপন্থি শিক্ষকের বক্তব্য ঘিরে হট্টগোল ও ওয়াকআউটের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (২১ জুন) বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে সিনেট অধিবেশনে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান তার বক্তব্যে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন কর্তৃক ছাত্রদলের ওপর হামলা ও বিরোধীমত দমনের প্রতিবাদ জানিয়ে সিনেট সভাপতি ও উপাচার্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। একইসঙ্গে তিনি আবাসিক হলগুলোতে ‘গেস্টরুম নির্যাতন’ প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেন।
এরপর পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান আওয়ামী লীগপন্থি নীল দলের কয়েকজন শিক্ষক। তাদের দাবি ঢাবিতে গেস্টরুম নির্যাতন নেই বরং বিএনপির আমল থেকে বর্তমান পরিবেশ ভালো।
পরে ‘গেস্টরুম নির্যাতন' অংশটি প্রত্যাহার করার দাবি জানান আওয়ামীপন্থি নীল দলের নেতা ও সিনেট সদস্য শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এম অহিদুজ্জামান।

দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এমন শব্দের সঙ্গে আমরা পরিচিত নয় উল্লেখ করে উপাচার্য বক্তব্যের ওই অংশটি প্রত্যাহার করেন। সাদা দলের সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, এটা আমাদের মনগড়া বক্তব্য নয়, পত্রিকায় নিয়মিত বিষয়গুলো আসছে।
এ সময় উপাচার্য পত্রিকার রেফারেন্স টানার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন।
এরপর উপাচার্য কর্তৃক বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার প্রতিবাদে সাদা দলের আহ্বায়ক ও সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান ও সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম অধিবেশন কক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন। পরে নীল দলের শিক্ষকরা থাকার অনুরোধ জানালেও তারা ফেরেননি।
কক্ষ থেকে বের হয়ে অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমার বক্তব্য উপাচার্য আরেকজন সদস্যের অনুরোধে ‘এক্সপাঞ্জ’ করেছেন। আমি কোনো অসত্য বক্তব্য দেইনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গেস্টরুম কালচার’ রয়েছে। সব দল মতের ছাত্ররা একইসাথে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। এটি কোনো অসত্য বক্তব্য নয়। সেটি ‘এক্সপাঞ্জ’ করায় আমি ওয়াকআউট করেছি।
সিনেট অধিবেশনে অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ক্যাম্পাসে সব দল মতের মানুষ একসঙ্গে থাকতে পারছে না। ছাত্রলীগের একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে। শিক্ষকদের আন্দোলনেও তারা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে যা নজিরবিহীন। ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের দিনদিন অবনতি হচ্ছে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর বেশ কয়েকবার হামলা করা হয়েছে। হলগুলোতে গেস্টরুম নির্যাতন হচ্ছে এবং ভিন্নমতের ছাত্ররা থাকতে পারছেন না।
অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, উপাচার্য অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করছেন না। তিনি কোনো ভূমিকা রাখছেন না এবং একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছেন। তিনি পত্রিকার রেফারেন্স মানবেন না কেন, আমরা কি সবসময় সবকিছু নিজ চোখেই দেখি?
অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদসহ সিনেট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এইচআর/এসকেডি