‘দরিদ্রদের করের টাকায় ধনীর সন্তানদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ অযৌক্তিক’

দরিদ্রদের প্রদেয় পরোক্ষ করের টাকায় ধনী পরিবারের সন্তানদের প্রায় বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়া অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (২১ জুন) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে বার্ষিক বাজেট উপস্থাপনের সময় এ কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ অফুরন্ত নয়। নিজস্ব আয় খুবই সীমিত। এই আয়ের সঙ্গে প্রতি বছর বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে সরকারের দেওয়া বরাদ্দ যুক্ত হয়। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশাসনিক ব্যয় দক্ষতার সঙ্গে মেটানো বেশ কঠিন কাজ। সম্পদ শিক্ষার মানের উত্তরণ যেমন ঘটায় না, তেমনি বলা যায় পর্যাপ্ত সম্পদ ছাড়া মানসম্মত শিক্ষা ও গবেষণার কাজ নিশ্চিত করা যায় না।
তিনি বলেন, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৯.৩০ শতাংশ নিজস্ব আয় থেকে পাব বলে আশা করি। এই আয় বহুলাংশে বৃদ্ধি করা সম্ভব। দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ পান। ‘সাবসিডাইজ হাইয়ার এডুকেশন’ এর সুযোগ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকা উচিত নয়।
তিনি আরও বলেন, এই দেশে প্রায় ২০ শতাংশ লোক আয়কর প্রদান করেন। পরোক্ষ করই সরকারের রাজস্বের প্রধান উৎস। এই পরোক্ষ কর ধনী/দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই দিয়ে থাকেন। দরিদ্রদের প্রদেয় পরোক্ষ করের টাকায় ধনী পরিবারের সন্তানদের প্রায় বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদান অযৌক্তিক।
কোষাধ্যক্ষ বলেন, সমাজের বিত্তবান অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের জন্য উচ্চশিক্ষার যুক্তিসঙ্গত ব্যয় বহন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে, যা থেকে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা সম্ভব হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বৃদ্ধি করা গেলে সরকারের উপর নির্ভরশীলতা ক্রমান্বয়ে কমবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সিনেট অধিবেশনে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামালসহ সিনেট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এইচআর/জেডএস