শ্রমিকলীগ নেতার হাতে জিম্মি ঢাবি শিক্ষার্থী, উদ্ধার করল পুলিশ

রাজধানীর আশুলিয়া থানা শ্রমিকলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও তার বাবাকে জিম্মি করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাবা গুণোধন চাকমার ব্যবসা সংক্রান্ত সমস্যার কারণে তাদের দুজনকে জিম্মি করে রাখা হয় বলে জানা যায়। পরবর্তীতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশের হস্তক্ষেপে মুক্তি পান তারা। এসময় আশুলিয়া থানা পুলিশ ঘটনার মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করে।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সাভারের আশুলিয়ায় এই ঘটনা ঘটে।
এদিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মামলা গ্রহণ করে দুপুর বারোটায় থানা থেকে ছাড়া পান ভুক্তভোগী ঢাবি শিক্ষার্থী ও তার বাবা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর চতুর্থ সেমিস্টার (২য় বর্ষ) ফাইনাল পরীক্ষায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম দিবস চাকমা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাবার নাম গুণধন চাকমা। তিনি অংশীদার ব্যাবসায় যুক্ত রয়েছেন। এসময় ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে আশুলিয়া থানায় দুজন আসামীর বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করা হয়।
অভিযুক্ত শ্রমিকলীগ নেতার নাম মুক্তার হোসেন মুন্সি। তিনি আশুলিয়া থানার শ্রমিকলীগের সভাপতি।
ভুক্তভোগী ঢাবি শিক্ষার্থী দিবস চাকমা বলেন, আমার বাবা অংশীদারী ব্যবসার সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন। বাবা যার সঙ্গে ব্যবসা করতেন সম্প্রতি তিনি মারা গেছেন। এর কারণে তার ঋণের টাকা সম্পূর্ণ আমার বাবার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। এলাকার প্রভাবশালী নেতাদের নিয়ে সালিশের ব্যবস্থা করা হলে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয় এবং হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। পরবর্তীতে আশুলিয়া থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি মুক্তার হোসেন মুন্সি তার নিজ অফিসে আমাদেরকে জিম্মি করে রাখে এবং বাকি টাকা পরিশোধ না করলে আটকে রাখবেন বলেও হুমকি দেন।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে আমি বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা আশুলিয়া থানা পুলিশকে জানায়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে রাত সাড়ে দশটার দিকে পুলিশ এসে আমাদের মুক্ত করেন এবং প্রতক্ষ দোষী একজনকে গ্রেপ্তার করেন।
তিনি আরও বলেন, আমি চাকমা নৃগোষ্ঠী। আমার কাছে ক্ষমতা নেই, আমার একমাত্র আশা ভরসা আমার প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু এখানে এসেও আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এখন আমার নিরাপত্তার জন্য আলাদা জিডি করতে চাই। আজ আমার চতুর্থ সেমিস্টারের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারিনি।
ঢাবির লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু হুসাইন মুহাম্মদ আহসান বলেন, সমস্যাটি ছিল দিবসের বাবার অংশীদার ব্যবসা সংক্রান্ত। সালিশের মাধ্যমে গতকাল রাত ১০ টার মধ্যে তাদের প্রায় এক লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলে তাদের দুজনকে জিম্মি করে রাখা হয়। পরবর্তীতে সে আমাকে কল করে জিম্মি করে রাখার বিষয়ে বললে আমি আশুলিয়া থানায় যোগাযোগ করে তাদেরকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করি। এসময় পুলিশ মূল হোতাকেও গ্রেপ্তার করে। দুপক্ষকেই থানা হেফাজতে রাখা হয়৷
এমএসএ