এখনো জাবিতে আটকা সেলফীর ২৫ বাস, ক্ষতিপূরণ দাবি পঁচিশ লাখ

ঢাকার ধামরাইয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক শিক্ষার্থী রুবেল পারভেজ বাসচাপায় নিহতের ঘটনায় সেলফী পরিবহনের ২৫টি বাস আটকে রেখেছে জাবি শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাসগুলো আটক আছে।
জানা যায়, বাস ছাড়ার ব্যাপারে আজ (শুক্রবার) বেলা ১১টায় সাভার হাইওয়ে থানায় জাবি শিক্ষার্থী ও সেলফী পরিবহন কর্তৃপক্ষ আলোচনায় বসে। সেখানে শিক্ষার্থীরা নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫ লাখ টাকা, পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল ও ড্রাইভারকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। সেলফী পরিবহন কর্তৃপক্ষ আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় চেয়েছে, কিন্তু এখনো কিছু জানায়নি।
এদিকে, ক্ষতিপূরণ না দেওয়া প্রর্যন্ত বাসগুলো ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রুবেল পারভেজকে চাপা দিয়ে হত্যা করেছে সেলফী পরিবহনের একটি বাস। পরিবহন কর্তৃপক্ষের এই ঘটনার ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তারা (পরিবহন কর্তৃপক্ষ) দাবি না মানলে সেলফী পরিবহনের বাস সড়কে চলাচল করতে দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন
এ বিষয়ে সেলফী পরিবহনের পরিচালক রফিকুল ইসলাম রফিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ সাভার হাইওয়ে থানায় আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলাম। সেখানে শিক্ষার্থীরা নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫ লাখ টাকা দাবি করেছেন। টাকার পরিমাণ অনেক বেশি, যা আমাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। এজন্য তারা এখনো আমাদের বাসগুলো আটকে রেখেছে। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত ছাড়বে না।

এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক মো. রনি হোসাইন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিক্ষার্থীরা মালিকপক্ষের কাছে নিহত রুবেল পারভেজের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, সেলফী পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল ও ড্রাইভারকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। দাবি না মানলে শিক্ষার্থীরা বাসগুলো ছাড়বে না।
এদিকে, আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রুবেল পারভেজ নিহতের ঘটনার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে বক্তারা রুবেল পারভেজের হত্যাকাণ্ডের বিচার ও নিরাপদ সড়কের পাশাপাশি সেলফী পরিবহনের রুট পারমিট বাতিলের দাবি জানান।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও সিনেট সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, যারা ঢাকা-আরিচা সড়কে চলাচল করেন, তারা সেলফী পরিবহনের আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করেন। সেলফী পরিবহনের চালকদের লাইসেন্স আছে কি না, আমরা সন্দিহান। গতকাল জাবি শিক্ষার্থী রুবেলকে পরিকল্পিতভাবে বাস চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এর বিচার করতে হবে। এই বিচার না হওয়া পর্যন্ত মহাসড়কে সেলফী পরিবহন চলতে দেওয়া হবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, রুবেল পারভেজের যে ক্ষতি হয়েছে, তা আমরা পূরণ করতে পারব না। কিন্তু তার পরিবারের সব ক্ষতিপূরণ সেলফী পরিবহনকে দিতে হবে। একই সঙ্গে এই পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল করতে হবে।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবদুর রহমান বাবুল, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের ধামরাই উপজেলার সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন প্রমুখ।
এমজেইউ