জাবিতে ধর্ষণের প্রতিবাদ গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি (ডিএসএফ)।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা একটি সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগে গিয়ে সমাপ্ত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মুস্তাফিজুর রহমান ও অভিযুক্ত মামুনকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানান। এছাড়া প্রক্টর, প্রভোস্ট ও অন্যান্য সহযোগীদের পদত্যাগের দাবি জানান।
কর্মসূচিতে ছাত্রশক্তির পক্ষ থেকে চারটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো-
১. দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রলীগের দখলদারিত্বের অবসান ঘটিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বৈধ সিট নিশ্চিত করতে হবে।
২. সারাদেশে যত ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সবগুলোর তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার করতে হবে।
৩. জাবির ধর্ষণে অভিযুক্ত মামুনকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৪. ধর্ষণকারীদের পালাতে সহায়তাকারী প্রভোস্ট, প্রক্টর ও অন্যান্যদের দ্রুত পদত্যাগ করতে হবে।
গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির ঢাবি আহ্বায়ক আসিফ মাহমুদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যেকোনো অন্যায় অনিয়মের কাজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা করা হচ্ছে। তবে ‘ব্যক্তির দায় সংগঠন নেবে না’ বলে ছাত্রলীগ বারবার দায়মুক্ত হচ্ছে। অথচ এই অপরাধীদের শক্তির মূল উৎস ছাত্রলীগ। আমরা দেখতে পাই, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রতিদিন চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম হয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা। এসব ঘটনায় অনেকেই আটক হচ্ছে কিন্তু ছাত্রলীগ তাদের সাময়িক বহিষ্কার করেই দায় এড়িয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এসব ঘটনা খুবই ক্ষুদ্র অংশ যা আমরা দেখতে পাই। এরচেয়ে কয়েকগুণ অপরাধমূলক কাজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা করে যা সর্বদা পর্দার আড়ালে থেকে যায়। সরকারের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে তারা সারাদেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করি, দেশের যেকোনো জায়গায় এমন কর্মকাণ্ড যদি ঘটে তাহলে সাথেসাথেই যেন অভিযুক্তদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয় এবং তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হয়।
ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন কাঠামো গড়ে তুলেছে যার বাইপ্রোডাক্ট হলো জাবির এ ধর্ষণের ঘটনা। জবাবদিহিতা ছাড়া ক্ষমতাই এই ঘটনার নেপথ্যে ইন্ধন যুগিয়েছ। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে আইন আদালতসহ সকল প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে। ফলে এই ঘটনার ন্যায় বিচার পাওয়া অনেকটাই অসম্ভব। আমরা দেখেছি, ছাত্রলীগের নেতা মুস্তাফিজ গতকাল পরিকল্পনামাফিক এই ধর্ষণ করেছে, যেখানে ভুক্তভোগী নারীর স্বামীকে রুমে বেঁধে রাখা হয়। এই ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পরে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের পালাতে সাহায্য করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যদি হল পাহারা দিয়ে ধর্ষকদের সহযোগীদের পালাতে বাধা না দিতো তাহলে তাদের কখনো আটক করাও সম্ভব হতো না।
গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব নাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব নুসরাত তাবাসসুম, সদস্য সানজানা আফিফা অদিতি বক্তব্য রাখেন।
কেএইচ/এসকেডি