দ্রুত রান্না শেষ করতে বলায় জবির হলে ছাত্রীকে নির্যাতন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ইতি খাতুন নামে এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তের নাম তাসমিম সানজানা সৃষ্টি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় ছাত্রী হলের হাউস টিউটর ও প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইতি খাতুন।
এদিকে বুধবার রাতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তাসমিম সানজানা সৃষ্টির বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিককে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছেন তার ছেলে বন্ধু ফাহিম ইশতিয়াক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৬-১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী ইতি খাতুন বলেন, ‘আমি রান্না করছিলাম। পরে চুলা ফাঁকা থাকায় সৃষ্টি আপু ডিম ভাজতে চাইলে চুলা ছেড়ে দিই। কিন্তু রান্না শেষ করতে দেরি হওয়ায় এবং আমার ক্লাসের সময় হওয়ায় আপুকে দ্রুত রান্না শেষ করতে বলি। কিন্তু আমি জুনিয়র বলে আমাকে প্রথমে অকথ্য ভাষায় গালি দেন আপু। প্রতিবাদ করলে আমাকে চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুষি মারে তিনি। পরের ঘটনা আমার মনে নেই, আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।
অভিযুক্ত তাসমিম সানজানা সৃষ্টি বলেন, ‘জুনিয়র হয়ে ইতি বেয়াদবি করেছিল। এজন্য আমি কি বসে থাকব? আমাকেও মারধর করা হয়েছে। আমিও অভিযোগ দিয়েছি।
হল প্রভোস্ট দীপিকা রানী বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। হলের শৃঙ্খলা কমিটিতে এটা তোলা হবে।’
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সৃষ্টিকে ফোন দেন সাংবাদিকরা। এর জেরে সৃষ্টির ছেলে বন্ধু ফাহিম ইশতিয়াক এক সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। নিউজ করলে মামলার হুমকিও দেন তিনি। এ সংক্রান্ত একটি কল রেকর্ডে ঢাকা পোস্টের হাতে রয়েছে। এতে শোনা যায়, ফাহিম ওই সাংবাদিককে ফোনে বলেন, ‘এই নিউজ যদি হয়, তুই যদি জড়িত থাকিস তোর খবর আছে। তর নামে মামলা হবে। তর লাইফ কীভাবে হেল করতে হয় আমি সেটা দেখব। তর সাহস কী। তুই আজ দেখা কর। তর খবর আছে।’
এ বিষয়ে হুমকি দাতা ফাহিম ইশতিয়াক বলেন, ‘ওই সাংবাদিক আমার বান্ধবীকে কল দেয়। বান্ধবী কান্নাকাটি করে আমাকে সমস্যার সমাধান করতে বলে। তাই আমি ওই সাংবাদিককে কল দিয়ে কথা বলি। উত্তেজিত হয়ে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে ফেলেছি।’
হুমকি দাতা ফাহিম ছাত্রলীগের পরিচয় দেন। সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যম ফেসবুকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির সঙ্গে ছবি রয়েছে।
তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি বলেন, ‘ওই ছেলে ছাত্রলীগের রাজনীতিই করে না। তাকে আমি চিনিই না।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘এটি নিন্দনীয় কাজ। সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত কাজ করবে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এমএল/এসকেডি