ছাত্রলীগ নেতার পক্ষ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) অর্থনীতি বিভাগ ছাত্রলীগের সহসভাপতি মৃদুল হাসান ক্যাম্পাসে প্রবেশ করায় তার ওপর ক্ষিপ্ত হন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করায় মৃদুলের পক্ষ নিয়ে কায়েস নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছেন ছাত্রলীগ কর্মী শ্রীকান্ত বাউল।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নোঙর বাসে বাসায় যাওয়ার পথে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় কায়েসকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
অভিযুক্ত শ্রীকান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে জবির অর্থনীতি বিভাগ ছাত্রলীগের সহসভাপতি মৃদুল ক্যাম্পাসে প্রবেশ করায় তাকে নানান ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘিরে ধরেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অভিযুক্ত শ্রীকান্ত ছাত্রলীগ নেতা মৃদুলের পক্ষে অবস্থান নেন।
তখন শ্রীকান্তকে ‘দালাল’ বলে আখ্যা দেন শিক্ষার্থীরা। এতে শ্রীকান্ত উত্তেজিত হলে সমাধানের জন্য জবি শিক্ষক লাউঞ্জে মীমাংসার জন্য বসেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসির উদ্দীন। এ সময় ভুক্তভোগী কায়েস ভিডিও করায় তার ওপর তেড়ে আসেন শ্রীকান্ত।
প্রত্যক্ষদর্শী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইভান তাহসীব বলেন, কায়েস ভিডিও করায় তার উপর উত্তেজিত ছিল শ্রীকান্ত। কায়েস সেখান থেকে চলে যাওয়ার পরও শ্রীকান্ত তাকে খুঁজছিল। পরে জানতে পারি, কায়েসকে বাস থেকে মারা হয়েছে।
ভুক্তভোগী কায়েস বলেন, আমি বাসে চড়ে মুরগিটোলার বাসায় যাচ্ছিলাম। শ্রীকান্ত বাসের ভেতরে আমাকে জিজ্ঞেস করে যে, কেন তুই ভিডিও করলি? আমি বলি, ভিডিও এমনিতেই করছিলাম। পরক্ষণেই সে আমাকে মারধর করে। সে আমাকে মারাত্মকভাবে পেটায়। তুই ভিডিও করার কে? বলেই মারধর শুরু করে। বাসের সিনিয়ররা এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে তাদের ওপরও সে ক্ষিপ্ত হয়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শ্রীকান্ত বলেন, হ্যাঁ, আমি মেরেছি। সেও আমাকে মেরেছে। আমার ভুল ছিল, আমি তার হাত থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিতে গিয়েছি। কিন্তু সে দিতে চাচ্ছিল না। পরে সে আমাকে ধাক্কা দেয়। আমিও তাকে জোরে ধাক্কা দেই। সে পড়ে যায়। সে আঘাত করলে আমিও তাকে আঘাত করি।
ছাত্রলীগ নেতা মৃদুলের পক্ষ নিয়ে কথা বলার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি ছাত্রলীগ করতাম না। কিন্তু অনেক ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। আমি দেখেছি, মৃদুল কোনো উগ্র কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। আমি ছাত্রদের বলেছি, যদি সে অন্যায় করে তার বিচার হবে। অন্যথায় তাকে ফুলের টোকাও দেওয়া যাবে না।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসির উদ্দীন বলেন, একটা ছেলেকে মারার বিষয়টা জেনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর নেই। প্রক্টর এলে বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে গিয়ে সমাধান করা যাবে।
এমএল/কেএ