জাবিতে ছাত্রদলের পরিচিতি সভায় হট্টগোল, ভাঙচুর

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের পরিচিতিমূলক সভা ঘিরে নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতাকর্মী ও পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের মধ্যে হট্টগোল এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে সভা স্থগিত ঘোষণা করেছেন জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে বিকেল ৪টায় পরিচিতিমূলক সভার আয়োজন করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি। বিকেল ৫টার দিকে সভা শুরু হয়। সভা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই আব্দুল কাদের মার্জুক, ইকবাল হোসেনসহ কয়েকজন পদবঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ এনে সভা বয়কটের ঘোষণা দেন। কমিটিতে ছাত্রলীগ ও শিবির পদ পেয়েছে এমন দাবি তুলে তারা স্লোগান দিতে দিতে বের হয়ে যান।
পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। এ সময় অডিটোরিয়ামের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তবে কে বা কারা এটি করেছে, তা জানা যায়নি। পাশাপাশি সেমিনার কক্ষের জানালা ও দরজা ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশেদুল আলম ঘটনাস্থলে গিয়ে মিলনায়তনের লাইটগুলো চালু করেন। সভা স্থগিত ঘোষণা করলে উভয়পক্ষ চলে যায়।
পদবঞ্চিত গ্রুপের অভিযোগ, বর্তমান কমিটির নেতারা বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে হামলা চালিয়েছেন। যেখানে এক কর্মী আহত হয়েছেন। তবে বর্তমান কমিটির নেতারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তৃতীয় কোনো পক্ষ এই উত্তেজনার পেছনে জড়িত।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী ও পদবঞ্চিত নেতা আব্দুল কাদের মারজুক বলেন, ফ্যাসিস্ট দানব শেখ হাসিনার নির্যাতনের স্টিম রোলার সহ্য করে গত এক যুগ ধরে আমরা যারা আন্দোলন করেছি তাদেরকে বঞ্চিত করে যে পকেট কমিটি হয়েছে সেই কমিটি মানি না। আমাদের অনেককে বঞ্চিত করা হয়েছে। অথচ ৫ আগস্টের পরও অনেকে প্রোগ্রাম করেনি তার নামও এসেছে এই কমিটিতে। এই কমিটি কীভাবে সভা-সমাবেশ করতে হয় তাও জানে না। আমরা এসেছিলাম এগুলো নিয়ে কথা বলতে কিন্তু এই কমিটি এতোটাই অযোগ্য যে তারা এই পরিবেশটাও তৈরি করে দিতে পারেনি।
জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, আমাদের একটি কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ছিল যে নতুন কমিটির সবাইকে নিয়ে একটি আনুষ্ঠানিক পরিচয় পর্বের আয়োজন করার। সেই লক্ষ্যে আমরা আজকের প্রোগ্রামটি আয়োজন করেছিলাম, এখানে মূলত যারা নতুন কমিটিতে আছে আমরা তাদেরকেই ইনভাইট করেছিলাম। কিন্তু এখানে এ রকম কয়েকজন উপস্থিত ছিল যাদের আমরা নাম-পরিচয় জানি না, আমরা ধারণা করছি গুপ্ত সংগঠনের ইন্ধনে তারা আমাদের প্রোগ্রাম বানচালের চেষ্টা করেছে। পদবঞ্চিতরা তাদের কষ্টের কথা জানিয়েছেন। আমরা সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। তবে আজকের উত্তেজনার পেছনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দিয়েছে। এছাড়া কমিটিতে ছাত্রলীগ-শিবির সংশ্লিষ্ট কেউ থাকলে প্রমাণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশেদুল আলম বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে তা আসলেই কাম্য নয়। আমরা চাই সবাই সুন্দরভাবে সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করুক সবাই। রাজনৈতিক কার্যক্রমে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখা জরুরি। আশা করব কেউ রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করবে না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মেহেরব হোসেন/আরএআর