বুয়েটে তিন দিনব্যাপী ‘রিনিয়েবল এনার্জি ফেস্ট’ শুরু

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ক্যাম্পাসে শুরু হতে যাচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে প্রথম উৎসব ‘রিনিয়েবল এনার্জি ফেস্ট ২০২৫’। আগামী ২৩-২৪ এপ্রিল দুই দিনজুড়ে চলবে এ উৎসব। উৎসবের প্রথম দিন হিসেবে ‘ফান্ড আওয়ার ফিউচার’ বৈশ্বিক প্রচারণা কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ রাজধানীতে বিশেষ র্যালি ও ফ্ল্যাশ মবের আয়োজন করা হয়।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। একশন এইড বাংলাদেশ, বুয়েট এবং জাস্ট এনার্জি ট্রিানজিশন নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (জেটনেট-বিডি) যৌথ উদ্যোগে এ উৎসবের আয়োজন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উৎসবের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনের কার্যক্রম জানিয়ে বলা হয়, আগামী ২৩ ও ২৪ এপ্রিল উৎসবের মূল আকর্ষণ থাকবে বুয়েট ইসিই ভবন চত্বরে। অনুষ্ঠাতব্য ‘উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি মেলা’ এবং ‘ইয়ুথ হাব’ উদ্ভাবন মেলায় দেশীয় উদ্ভাবকদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ক অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও ধারণা প্রদর্শন করা হবে। প্রযুক্তি মেলায় কর্পোরেট খাতের প্রতিষ্ঠিত নবায়নযোগ্য জ্বালানি পণ্য ও সেবা তুলে ধরা হবে। ইয়ুথ হাব-এ তরুণরা ডায়ালগ, কর্মশালা ও কুইজের মাধ্যমে তাদের ভাবনা ও উদ্ভাবনী ধারণা সকলের সামনে তুলে ধরবে এবং জলবায়ু আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নিতে উৎসাহিত হবে।
আরও পড়ুন
এছাড়াও এই দুই দিনে সর্বমোট ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ পলিসি ডায়ালগ সেশন অনুষ্ঠিত হবে। এই সেশনগুলোতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব, নীতি ও সুশাসন, অর্থায়ন ও বিনিয়োগ, অবকাঠামো ও প্রযুক্তি, নারীর অংশগ্রহণ এবং জলবায়ু ও ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের জন্য তরুণদের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকরা। এসব আলোচনা থেকে উঠে আসা সুপারিশগুলো নীতি নির্ধারকদের কাছে সুপারিশ পেশ করা হবে। উৎসবের শেষ দিনে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হবে।
একশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবিরের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রতিষ্ঠানটির জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশন টিমের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ। এছাড়াও বুয়েটের অধ্যাপক ড. এম. এ. এ. শওকত চৌধুরী এবং ইডকল, সিটি ব্যাংক ও বিএসআরইএ-এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই উৎসবে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, বিশেষজ্ঞ ও তরুণ প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। আমাদের মূল লক্ষ্য-সংলাপ ও উদ্ভাবনী মেলার মাধ্যমে ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের ভিত্তি স্থাপন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির উদ্ভাবন তুলে ধরা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। উদ্ভাবন মেলা ও ইয়ুথ হাব তরুণদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ। সমাপনীতে স্থানীয় উদ্ভাবকদের আইডিয়া উপস্থাপন এবং সেরা উদ্ভাবকদের পুরস্কৃত করা হবে। এই উৎসব সবুজ ও ন্যায্য ভবিষ্যতের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার।
ন্যায্য, টেকসই জ্বালানি রূপান্তরে সবাইকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ফারাহ্ কবির বলেন, আজকের এই ফ্ল্যাশ মব ও র্যালি প্রমাণ করে যে আমাদের যুব সমাজ একটি ন্যায্য ও টেকসই জ্বালানি ভবিষ্যৎ চায়। জীবাশ্ম জ্বালানির দূষণ থেকে মুক্তি এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি সবুজ বাংলাদেশ নির্মাণে সবাই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এই উৎসব সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
অধ্যাপক ড. এম. এ. এ. শওকত চৌধুরী বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি আমাদের ভবিষ্যতের জন্য অপরিহার্য। এই উৎসবে তরুণদের উদ্ভাবনী চিন্তা এবং বিশেষজ্ঞদের জ্ঞান সমন্বিত হয়ে একটি টেকসই জ্বালানি নীতি প্রণয়নে সহায়তা করবে। বুয়েট এই প্রচেষ্টার অংশ হতে পেরে গর্বিত, এবং আমরা আশা করি, এই উৎসব দেশের জ্বালানি খাতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
এমএইচএন/এআইএস