জুলাই নিয়ে একক ব্যক্তি বা দলের ক্রেডিট নেওয়ার সুযোগ নেই

জুলাই গণঅভ্যুত্থান কোনো একক ব্যক্তির ক্রেডিট নয়। বরং এটি ছিল সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সম্মিলিত অংশগ্রহণ ও প্রচেষ্টা। কিছু ব্যক্তি এই গণ-অভ্যুত্থানের ক্রেডিট নিয়ে বিভেদ তৈরি করছে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কারো প্রতি বৈষম্য করা যাবে না। মহান মুক্তিযুদ্ধও কিন্তু এক ব্যক্তি ও একটি দলের মধ্যে কুক্ষিগত রাখতে চেষ্টা করতে গিয়েও কিন্তু তারা সফল হয়নি।
সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে শহিদ সাজিদ অ্যাকাডেমিক ভবনে ‘জুলাই বিপ্লব ২০২৪ বৈষম্যহীন বাংলাদেশ (সম্ভাবনা - সংকট - উত্তরণ)’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারটির আয়োজন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেন, আজ সবাই বিপ্লবের অংশ হতে চান, কিন্তু যারা বিপ্লবে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেন নি তারা কেন নিজের ভূমিকার কথা সবার সামনে স্বীকার করেন না? জুলাই বিপ্লবের ক্রেডিট নিয়ে আজ যারা কাড়াকাড়ি করছে তারা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। আমাদের এই ছোট্ট দেশ, এখানে বিভেদ সৃষ্টি করলে চলবে না, সবাই মিলেমিশে থাকতে হবে। আমরা কাউকে জুলাই নিয়ে বিভেদ সৃষ্টি করতে দেব না।
আরও পড়ুন
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার বলেন, এই আন্দোলনে সবার ভূমিকা আছে। শিক্ষকদেরও যে এই আন্দোলনে ভূমিকা আছে তা সেভাবে স্বীকৃতি পায় না। এই আন্দোলনে ভূমিকা সবার। আমি চেয়েছিলাম আমি বাসা থেকে যে আন্দোলনে যাই সেটা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের সন্তানরা পরবর্তী যেকোনো আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমরা যখন সকল শ্রেণির মানুষ একসঙ্গে হয়েছিলাম তখন আন্দোলন সফল হয়েছিল।
সেমিনার বক্তা অধ্যাপক ড. নাছির আহমদ বলেন, আওয়ামী বিরোধী যত দল ছিল সবাই এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। এই আন্দোলনের স্টেক হোল্ডার সবাই। ফাঁস হাওয়া অডিওতে আমরা শুনেছি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের উপর মারণাস্ত্র ব্যবহার করার হুকুম দিচ্ছে। আমাদের ট্যাক্সের টাকায় কেনা গুলি আমাদের উপর চালানো হয়েছে।
সেমিনারের আলোচক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, কোনো বিপ্লব হঠাৎ করে হয়ে যায় না। প্রতিটি বিপ্লবই সচেতনভাবে ডিজাইন করা। গত সাড়ে পনেরো বছর ধরেই এই ডিজাইন আমাদের মনের ভেতর হয়েছে। এই আন্দোলনও সচেতনভাবে ডিজাইন করা।
সভাপতির বক্তব্যে মুর্শিদা বিনতে রহমান বলেন, আমরা যদি একাত্তর পরবর্তী বাংলাদেশ দেখি আমরা কিছু প্যারামিটার দেখতে পাই। ট্যাগের রাজনীতি আমরা দেখেছি। আমরা সবাই এই সুন্দর নতুন বাংলাদেশে একসাথে ভালো থাকতে চাই।
এছাড়া সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন মো. হাসান মফিজুর রহমান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এমএল/এআইএস