রাকসু নির্বাচন : ফলাফলের অপেক্ষায় উৎসবমুখর ক্যাম্পাস

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে বিকেল চারটায়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর রাত পৌনে নয়টায় ভোট গণনা শুরু হয়েছে। প্রথমে ছেলেদের ও পরে মেয়েদের হলের ভোট গণনা করা হচ্ছে। এরপরই নির্বাচন কমিশন ফলাফল প্রকাশ করবে।
ভোট শেষে এখন পুরো বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে অপেক্ষার প্রহর। শিক্ষার্থী থেকে প্রার্থী— সবার মুখে এখন একটাই কথা, ‘ফলাফল কবে?’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে-বাইরে উৎসবমুখর পরিবেশে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন শিক্ষার্থীরা ও তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
আজ সকাল নয়টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। দিনভর উৎসবমুখর পরিবেশে শিক্ষার্থীরা ভোট দেন। তবে ভোটের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশে বিএনপি ও জামায়াতের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তাদের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অপ্রিয় ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
ভোটের দিন সকাল থেকে ক্যাম্পাসের বাইরে, বিশেষ করে বিনোদপুর ও কাজলা গেট এলাকায়, বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তারা সেখানে অবস্থান করছেন। বিএনপিপন্থি ছাত্রদলের প্রার্থীদের সমর্থনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের কাছে শামিয়ানা টাঙিয়ে বসার জায়গাও তৈরি করা হয়। অপরদিকে একই সড়কের বিপরীতে বেঞ্চে বসে অবস্থান নেন জামায়াত ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়া নামের এক ছাত্রী বলেন, রাকসু নির্বাচনের গল্প শুনেছি। এবার নির্বাচনের সাক্ষী হলাম। এই নির্বাচনকে ঘিরে অনেক কিছু ভেবে রেখেছিলাম। ভোট দেব, গণসংযোগ করব। তার সবই করেছি। রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেক মজা হয়েছে আমাদের। সারাদিন ভোটগ্রহণ হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশে। এখন আমরা ফলাফলের অপক্ষায় আছি।
আরেক শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, প্রার্থী ছিলাম না, তবে ভোটার ছিলাম। পছন্দের প্রার্থী কাছের মানুষ ছিল। তাকে ভোট দিয়েছি। প্রত্যাশা আছে। জয় নিয়ে রুমে ফিরব। ভোট দিয়ে রুমে গিয়েছিলাম। রুমে ভালো লাগছে না। কেউ রুমে নেই। সবাই ভোট গণনার জায়গায় এসেছেন। এখানে আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে। ভোট গণনা শুরু হয়েছে। যতই সময় যাচ্ছে ততই চিন্তা বাড়ছে। আশা করছি ভালো ভোট পাবেন তার প্রার্থী।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্য শাহজাহান আলী সাংবাদিকদের বলেন, রাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্রার্থীদের উৎসাহ জোগাতে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা এখানে এসেছে। আমরা এসেছি নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আনন্দ করতে। যে ফলাফলই হবে সেটাই মেনে নেব।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জামায়াতের এক নেতা বলেন, রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা এসেছেন। এখানে বিশৃঙ্খলার কোনো সুযোগ নেই।
রাকসু নির্বাচন পরিদর্শক অধ্যাপক এম. রফিকুল ইসলাম বলেন, “বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সার্বিকভাবে বলা যায়, ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
রাকসু নির্বাচনের ফলাফল রাতেই প্রকাশ করার কথা রয়েছে। শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নজর এখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ঘোষণার দিকে।
শাহিনুল আশিক/এআইএস