ইবির জুলাই বিরোধীদের শাস্তির মাত্রা নির্ধারণে রিভিউ কমিটি গঠন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জুলাই বিরোধী আন্দোলনে জড়িত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাস্তির মাত্রা নির্ধারণে সাত সদস্যের রিভিউ কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটি প্রয়োজন হলে নতুন অভিযোগও গ্রহণ করতে পারবে। রোববার (২৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কমিটিকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. পারভেজ আজহারুল হককে। তিনি রাবি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ইবির আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. জাকির হুসাইন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু সিনা, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অধ্যাপক ড. জাফর উল্লাহ তালুকদার।
কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. পারভেজ আজহারুল হক বলেন, আমি এখনো অফিসিয়ালি কিছু জানি না। এক সিনিয়র অধ্যাপক আমাকে কমিটিতে রাখার বিষয়ে অনুরোধ করেছিলেন। তখন আমি বলেছিলাম, আমার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়, হয়তো দায়িত্ব পালন করতে পারব না।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, অনেকের সঙ্গে কথা বলেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেউ দায়িত্ব ছাড়লে অন্য কাউকে দেওয়া হবে।
এর আগে, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বিরুদ্ধে সক্রিয় থাকা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে গত ১৫ মার্চ আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আকতার হোসেনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে প্রশাসন। প্রত্যক্ষদর্শীর লিখিত-মৌখিক অভিযোগ, তথ্যচিত্র, ভিডিও ও পত্রিকার খবর পর্যালোচনার ভিত্তিতে ওই কমিটি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট বিপ্লববিরোধী ও নিবর্তনমূলক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পায়। পরে কমিটি প্রতিবেদন দিলে প্রশাসন অভিযুক্তদের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠায়।
পরবর্তীতে গত ৩০ অক্টোবর ২৭১তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে ছাত্রলীগের ৩৩ জন নেতাকর্মীর মধ্যে নিয়মিতদের বহিষ্কার এবং একাডেমিক কার্যক্রম শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি তাদের শাস্তির মাত্রা নির্ধারণে রিভিউ কমিটি গঠনের দায়িত্ব উপাচার্যকে দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে ১০ জন শিক্ষককে আনুষ্ঠানিক চিঠিও দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রকাশ্যে জুলাই-আগস্ট বিপ্লববিরোধী হিসেবে চিহ্নিত ৬৩ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও তাদের উসকানিদাতা এবং পেছন থেকে আন্দোলন দমনে যুক্ত অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। একই অভিযোগ জানিয়েছেন অভিযুক্তরাও।
এআরবি