দেশি-বিদেশি ১৩০ প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে আইইউবিএটিতে ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল

তরুণ প্রজন্মের ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবের কাছাকাছি নিয়ে যেতে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) আয়োজন করেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ চাকরিমুখী অনুষ্ঠান- ঢাকা ব্যাংক প্রেজেন্টস আইইউবিএটি ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল ২০২৫।
শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আইইউবিএটির সবুজ-শান্ত ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এই দিনব্যাপী উৎসবে অংশ নেয় দেশি-বিদেশি ১৩০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান।
প্রতিবছরের মতো এবারও আইইউবিএটি শিক্ষার্থীদের চাকরি- বাজারে প্রবেশকে সহজতর করতে এবং করপোরেট বিশ্বের সঙ্গে একাডেমিয়ার স্থায়ী সেতুবন্ধন গড়ে তুলতেই এই বৃহৎ কর্মসংস্থান উৎসব আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যান্ডিং অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস অফিস। এবারের আয়োজন অংশগ্রহণ, পরিসর, নিয়োগসংখ্যা ও করপোরেট সম্পৃক্ততার দিক থেকে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
আইইউবিএটি ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’-এ দেশের প্রথম সারির করপোরেট গ্রুপ, ব্যাংকিং খাত, টেলিকম, ই-কমার্স, আইটি, হেলথকেয়ার, ম্যানুফ্যাকচারিং, হসপিটালিটি, এনজিও, এগ্রিবিজনেসসহ বিভিন্ন খাতের প্রায় ১৩০টি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
শুধু দেশি প্রতিষ্ঠান নয়- এবারের উৎসবে আন্তর্জাতিক কোম্পানি, মাল্টিন্যাশনাল ফার্ম এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানও ক্যাম্পাস-আধুনিক করপোরেট পরিবেশে উপস্থিত ছিল। অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের বুথে ভিড় জমায় হাজারো শিক্ষার্থী, গ্রাজুয়েট এবং তরুণ চাকরিপ্রত্যাশীরা।
এ বছর এসব প্রতিষ্ঠান মোট ১,২০০-এরও বেশি শূন্যপদ নিয়ে উৎসবে হাজির হয়। দিনব্যাপী তারা অনস্পট সিভি সংগ্রহ, প্রাথমিক স্ক্রিনিং, লিখিত পরীক্ষা, গ্রুপ ডিসকাশন এবং সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করে।
ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যালের মূল উদ্দেশ্য হলো, শিক্ষার্থীদের নিয়োগদাতাদের সরাসরি কাছে পৌঁছে দেওয়া, যাতে তারা চাকরি–বাজারের বাস্তব চাহিদা, প্রয়োজনীয় দক্ষতা, পদের দায়িত্ব, ক্যারিয়ার পথচলা, বেতন–সুযোগ–সুবিধা এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ ধারণা পায়।
এবারের উৎসবও শিক্ষার্থীদের কাছে অত্যন্ত ইতিবাচক অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে। তারা নিয়োগ–দাতাদের সাথে খোলামেলা কথা বলে নিজেদের দক্ষতা, প্রস্তুতি এবং দুর্বলতার জায়গা চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়। প্রতিষ্ঠানের এইচআর প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের সিভি উন্নয়ন, ইন্টারভিউ প্রস্তুতি, জব রোল নির্বাচন ও করপোরেট কালচার সম্পর্কে বাস্তবধর্মী পরামর্শ দেন।
অনেক শিক্ষার্থী দিনেই প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়, আবার অনেকের জন্য তৈরি হয় পরবর্তী নিয়োগধাপে অংশ নেওয়ার সুযোগ। বিশেষ করে আইটি, ব্যাংকিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ডাটা অ্যানালিটিক্স, হসপিটালিটি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়।
দিনব্যাপী উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ১০টি ক্যারিয়ার সেশন, যেখানে দেশের অভিজ্ঞ মানবসম্পদ পেশাজীবীরা শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন। এতে অংশগ্রহণ করে শত শত শিক্ষার্থী।
প্রতিটি সেশনে আলোচিত হয়- ভবিষ্যতের চাকরি–বাজারে কোন দক্ষতার চাহিদা বাড়ছে, ইন্টার্নশিপের গুরুত্ব,সিভি ও কাভার লেটার প্রস্তুতি,ইন্টারভিউতে আত্মবিশ্বাস,করপোরেট আচরণ ও যোগাযোগ দক্ষতা,নেতৃত্ব ও টিমওয়ার্ক,ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের কৌশল, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) যুগে কর্মসংস্থানের নতুন সম্ভাবনা
এই সেশনগুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা সৃষ্টি করে এবং অনেকেই বলেন- এই উৎসব তাদের ক্যারিয়ার পরিকল্পনায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি যোগ করেছে।
দিনের শেষে অনুষ্ঠিত হয় একটি বিশেষ প্যানেল ডিসকাশন, যেখানে বাংলাদেশের শীর্ষ করপোরেট নেতা, সফল উদ্যোক্তা এবং বিখ্যাত এইচআর পেশাজীবীরা অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনায় উঠে আসে- বাংলাদেশের সামগ্রিক কর্মসংস্থান পরিস্থিতি, করপোরেট সেক্টরের বর্তমান চাহিদা, স্নাতকদের দক্ষতার ঘাটতি ও সমাধানের পথ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা, নৈতিকতা, স্বচ্ছতা ও কর্মসংস্কৃতির মতো মৌলিক গুণাবলি
প্যানেলিস্টরা বলেন, একাডেমিক ডিগ্রি সফলতার জন্য প্রয়োজন, তবে দক্ষতা, মনোভাব ও বাস্তব অভিজ্ঞতা ছাড়া দীর্ঘমেয়াদে প্রতিষ্ঠিত হওয়া কঠিন। শিক্ষার্থীদের জন্য এই আলোচনা ছিল অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক।
ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যালের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ ছিল অনস্পট ইন্টারভিউ। সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্লক, সেমিনার রুম এবং বুথ এলাকায় একাধিক কোম্পানি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে।
অনেক শিক্ষার্থী প্রথমবারের মতো ক্যাম্পাসেই করপোরেট ইন্টারভিউয়ের অভিজ্ঞতা লাভ করেন।
ইউনিভার্সিটির শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং স্বেচ্ছাসেবক দল ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহায়তা করে।
আইইউবিএটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। প্রতি বছর বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্ট, ইন্টার্নশিপ প্লেসমেন্ট এবং করপোরেট সহযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের চাকরি–সুযোগ নিশ্চিত করে থাকে।
এই ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল সেই সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করে। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই শিক্ষার্থীদের
এমএসএ
