বাকৃবিতে উদ্ভাবিত কৃষি প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে হস্তান্তর জোরদারের দাবি

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) কৃষি উদ্ভাবনের পেটেন্টিং প্রযুক্তি হস্তান্তর ও বাণিজ্যিকীকরণ কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন হলে এই কর্মশালার উদ্বোধন করা হয়।
বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অর্থায়নে এবং উচ্চশিক্ষা ত্বরান্বিতকরণ ও রূপান্তর (এইচইএটি) প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় টেকনোলজি ট্রান্সফার অফিস (বিএইউ-টিটিও) শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে কর্মশালাটির আয়োজন করা হয়। এ সময় বক্তারা বাকৃবিতে উদ্ভাবিত কৃষি প্রযুক্তি মাঠপর্যায়ে হস্তান্তর কার্যক্রম আরও জোরদার করার দাবি জানান।
হিট সাব-প্রজেক্টের ব্যবস্থাপক অধ্যাপক ড. এম. হাম্মাদুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য অধ্যাপক ড. মো. শাহেদ রেজার সঞ্চালনায় কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এবং এসিআই ফার্টিলাইজারের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর কৃষিবিদ বশির আহমেদ। কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হিট সাব-প্রজেক্টের সহকারী ব্যবস্থাপক অধ্যাপক ড. এ কে এম আহসান কবীর। স্বাগত বক্তব্য দেন বাউরেসের সহকারী পরিচালক এবং হিট সাব-প্রজেক্টের সদস্য অধ্যাপক ড. জাভিদুল হক ভূঁইয়া। প্রকল্পের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন বাকৃবির উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলম এবং ডিপিডিটির পরিচালক ড. অশোক কুমার রায়। এছাড়াও কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক, গবেষক এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, বাকৃবির সিনিয়র শিক্ষকদের অধিকাংশই কৃষি ও কৃষকের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে নানামুখী গবেষণায় নিয়োজিত। কৃষি গবেষণায় এখানকার গবেষকদের ঈর্ষণীয় সাফল্য থাকলেও পেটেন্টিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা এখনো পিছিয়ে আছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা যে প্রযুক্তি, ফর্মুলেশন বা জ্ঞানভিত্তিক পণ্য উদ্ভাবন করছি, সেগুলো অবশ্যই আইপি পলিসি অনুসরণ করে নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে। কৃষি গবেষণার সুফল কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে উদ্ভাবিত প্রযুক্তির বাণিজ্যিকীকরণ ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য।
ডিপিডিটির মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি ও পেটেন্ট আমরা সঠিকভাবে নিবন্ধন বা ব্যবহার করতে পারছি না। একাডেমিক ও শিল্পখাতের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে পারলে দেশীয় প্রযুক্তি উন্নয়ন ও মেধাস্বত্ব সুরক্ষা আরও জোরদার হবে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ড. আহসান কবীর বলেন, কৃষি খাতে উদ্ভাবিত প্রযুক্তির পেটেন্ট সুরক্ষা, শিল্পখাতে প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং গবেষণালব্ধ ফল বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগানোর কৌশল আমরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে জানতে পারবো। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাকৃবিতে উদ্ভাবিত নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পেটেন্ট লাভ করবে এবং বাণিজ্যিকভাবে বিস্তারের পথ সুগম হবে।
মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর/এআরবি