এই দিন দিন নয় আরও দিন আছে : হামলার প্রতিক্রিয়ায় ঢাবি ছাত্রদল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রদলকে বিতরণ করার সুগভীর চক্রান্তের অংশ হিসেবে বারবার ছাত্রদলের ওপর হামলা চালাচ্ছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ চায় ছাত্রদল যেন ক্যাম্পাসে না থাকতে পারে। আমরাও হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, এই দিন দিন নয় আরও দিন আছে। আপনারাও বিরোধী দলে আসবেন, এসব হামলার জবাব তখন পাবেন।
রোববার (২৯ আগস্ট) দুপুরে ছাত্রদলের নেতাদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ঢাবি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন ঢাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উস্কানিতে ছাত্রলীগ হামলা করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রনিকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও তাদের মুক্তির দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালনকালে বিএনসিসির সামনে এলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাইক শোডাউন দিয়ে, দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এতে আমাদের ১৯ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়া আরও বেশ কিছু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং বিচার দাবি করছি।
ওবায়দুল কাদের উস্কানিতে হামলা হয়েছে উল্লেখ করে রাকিব বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত পরশু দিন ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে আমাদের ইঙ্গিত করে বলছেন, আমরা নাকি ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে চাই। আমরা মনে করি, এটার অংশ হিসেবে আজ আমাদের ওপর হামলা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আকতার হোসেন বলেন, আমাদের দুজন কেন্দ্রীয় নেতাকে যখন সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুম করার উদ্দেশ্যে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় তখন স্বাভাবিকভাবে এর প্রতিবাদ করা আমাদের দায়িত্ব। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমরা শহিদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে টিএসসির দিকে যাওয়ার সময় বিএনসিসি পার হলেই ঢাবি ছাত্রলীগ ও ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছে। তাতে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক আশরাফুল ইসলাম খান আনিক, হাসান আল আরিফ, এবিএম ইজাজুল কবির রুয়েল, শরীফ প্রধান, আরিফুল ইসলাম; আহ্বায়ক সদস্য এস এম দিদারুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম আরিফ, ফারহান আরিফ, নাসির উদ্দিন শাওন; হাজী মুহম্মদ মহসিন হল ছাত্রদলের সভাপতি মো. ওমর ফারুক মামুন, শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রদলের সভাপতি গাজী মো. সাদ্দাম হোসেন, ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রদলের সভাপতি মো. মাসুম বিল্লাহ্, সূর্যসেন হল ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবু হান্নান তালুকদার, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেনসহ আরও অনেকে হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে বলে উল্লেখ করেন নেতৃবৃন্দ।
এর আগে আজ রোববার (২৯ আগস্ট) সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রদলের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি অফিসের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমানসহ সংগঠনের ২০ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে দাবি করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব। আহতরা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে তিনি জানান।
তবে এ হামলা ছাত্রলীগ নয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের ঘাতকদের যারা উত্তরাধিকারী, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করা যাদের একমাত্র রাজনৈতিক অ্যাসাইনমেন্ট এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে যারা রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি হাসিল করতে চায়
তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ জানাবে এটাই স্বাভাবিক।
সাধারণ শিক্ষার্থী কারা জানতে চাইলে সাদ্দাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হিসেবে সবার একটি পরিচয় রয়েছে। আগস্ট মাসে এসব ঘাতকদের শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই স্বাগত জানাতে পারে না।
তবে এ বিষয়ে জানতে একাধিক বার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও সাড়া না মেলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এইচআর/এইচকে