শিক্ষার্থীদের বরণে প্রস্তুত হচ্ছে ঢাবির হল, থাকছে না গণরুম

Dhaka Post Desk

আমজাদ হোসেন হৃদয়, ঢাবি

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৭:০৯ এএম


শিক্ষার্থীদের বরণে প্রস্তুত হচ্ছে ঢাবির হল, থাকছে না গণরুম

করোনার কারণে গত বছরের ২০ মার্চ থেকে বন্ধ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলগুলো। তবে শিক্ষার্থীদের টিকা নেওয়ার শর্তে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের পর আবাসিক হল খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, বিজয় একাত্তর হল, কবি জসিম উদ্দিন হল, বঙ্গবন্ধু হলসহ কয়েকটি হল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছুটির দিনেও চলছে সংস্কারের কাজ। দেয়ালে রং করা, হাত ধোয়ার বেসিন বসানোসহ কক্ষ পরিষ্কার, মেস ও ক্যান্টিন মেরামতের কাজ চলছে।

Dhaka Post

হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হলগুলো সংস্কারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুদান এসেছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী হল খোলার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি হলের কাজ ৯০ শতাংশ শেষ। আগামী ১০ সেপ্টেম্বরে মধ্যে শিক্ষার্থী বরণে হলগুলোকে শতভাগ প্রস্তুতির নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর শুধুমাত্র বৈধ শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট হলের নীতিমালার আলোকে হলে অবস্থান করতে পারবেন। যাদের ছাত্রত্ব নেই, তারা কোনোভাবেই হলে অবস্থান করতে পারবে না। এছাড়াও কোনো ধরনের গণরুম থাকবে না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

Dhaka Post

হল খোলার প্রস্তুতির নিয়ে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির ঢাকা পোস্টকে বলেন, হল খোলার প্রস্তুতি হিসেবে হলের গেটে চারটা বেসিন বসানো হয়েছে। হলের কক্ষ, ক্যান্টিন রুম, রিডিং রুম সংস্কার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ হলের সংস্কার কাজের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১০ সেপ্টেম্বরে মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুত হয়ে যাবে। আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন বুঝতে পারে, তারা ভালো পরিবেশে এসেছে। তারা মানসিকভাবে যেন সুন্দর পরিবেশ পায় সে অনুযায়ী কাজ চলছে।

গণরুমের বিষয়ে তিনি বলেন, হলগুলোতে এখন আর গণরুম থাকবে না। উপাচার্য স্যারের নেতৃত্বে প্রভোস্ট কমিটি একটি নীতিমালা করেছে। আর কোনো শিক্ষার্থী ফ্লোরে ঘুমাবে না, অবশ্যই একটা খাট নির্ধারিত থাকবে। গণরুমে কোনো শিক্ষার্থী থাকছে না। মানসম্পন্ন রুমগুলোতে আমরা বরাদ্দ দিয়ে রেখেছি। হল খোলার পর এই প্রক্রিয়া শুরু হবে।Dhaka Post

প্রভোস্ট কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী বলেন, কোনো হলে গণরুম ও অছাত্র থাকতে পারবে না। সে অনুযায়ী একটি গাইড লাইন তৈরি করা হয়েছে। করোনাকালে হল খুললে যে ঝুঁকি, তার অগ্রগতি ও বিশেষজ্ঞদের মতামত সাপেক্ষে করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে।

সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের হল গেটে বেসিন বসানো, রং করাসহ রুম মেরামতের কাজ চলছে। প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ। আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাকি কাজ শেষ হয়ে যাবে। আমাদের হলের অন্যতম প্রধান সমস্যা শিক্ষার্থী বারান্দায় থাকতে হয়, ওই অবস্থা যাতে না হয় সে অনুযায়ী কাজ চলছে।

Dhaka Post

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাবেদ হোসেন বলেন, হল খোলার জন্য যা যা প্রস্তুতি প্রয়োজন, তা আমরা আগামী ১০ তারিখের মধ্যে সম্পন্ন করে ফেলব। আশা করছি শিক্ষার্থীরা আগের চেয়ে উন্নত পরিবেশ পাবে।

জানতে চাইলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আকরাম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুরোদমে হল খোলার প্রস্তুতি চলছে, ছুটির দিনেও কাজ চলমান। হলের ২-৩ জন সিনিয়র হাউজ টিউটর সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন। ১০ সেপ্টেম্বরে মধ্যে আমাদের হল পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুত হবে। যখনই হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসবে, তখনই আমরা হল খুলে দিতে পারব।

Dhaka Post

করোনা পরিস্থিতি এবং শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনেশনের হার পর্যবেক্ষণ শেষে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে এ তথ্য জানান ঢাবি উপাচার্য। প্রভোস্ট কমিটির সভার সুপারিশের আলোকে ডিন কমিটির বৈঠকে যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, সে রোডম্যাপ অনুযায়ী ক্যাম্পাস খোলা হবে বলে জানান তিনি।

Dhaka Post

উপাচার্য বলেন, আগের যে রোডম্যাপ ছিল সে পরিকল্পনা মোতাবেক আমরা অগ্রসর হচ্ছি। শিক্ষার্থীদের ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিকা কার্যক্রমের আওতায় এসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সাথে করোনা পরিস্থিতির দিকেও আমরা লক্ষ্য রাখছি। তারপর আমরা পর্যালোচনা করে খোলার তারিখ নির্ধারণ করতে পারব।

এইচআর/ওএফ

Link copied