কুবির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা

Dhaka Post Desk

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, কুবি

২৬ অক্টোবর ২০২১, ০৮:১৩ এএম


কুবির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) চারটি একাডেমিক ভবন, চারটি হল ও একটি প্রশাসনিক ভবনে নেই যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ ভবনে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। আবার যেগুলো আছে তাদের অধিকাংশই ফাঁকা।

অনেক যন্ত্রে নেই মেয়াদকাল নির্দেশক স্টিকারও। দু-একটি থাকলেও সেগুলোর  মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নিকাণ্ডের কোনো ঘটনা ঘটলে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা যেমন নেই তেমনি ভবনগুলো থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বের করে আনার ব্যবস্থাও নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন-২০০৩ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলোতে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রগুলো লাগানো হলেও করা হচ্ছে না এগুলোর যথাযথ তদারকি। বিশ্ববিদ্যালয়ের চার হলে (শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল, কাজী নজরুল ইসলাম হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হল) অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র প্রায় নেই বললেই চলে।

Dhaka Post

যেগুলো ঝুলে থাকতে দেখা যায় সেগুলোতেও নেই মেয়াদ। হলের মতোই একই চিত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদে। ছয়তলা এই অনুষদের নিচতলায় লাগানো দুইটি যন্ত্রের একটিতেও নেই রসায়নিক পদার্থ। একইভাবে ব্যবসা শিক্ষা অনুষদ ও বিজ্ঞান অনুষদ ভবনেও ঝুলছে ফাঁকা যন্ত্রগুলো।

এমনকি প্রশাসনিক ভবনের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলোও মেয়াদোত্তীর্ণ। এছাড়া প্রশাসনিক ভবনের মতো গুরুত্বপূর্ন ভবনে নেই কোনো জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি। ২০১৮ সালের এপ্রিলে একবার ফায়ার সার্ভিসে অগ্নি প্রতিরোধের মহড়া হলেও এরপর আর তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিকটতম ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিফিল ডিফেন্সের ইপিজেড ও বাগিচাগাঁও স্টেশন দুটি যথাক্রমে ৮ ও ১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। খানাখন্দে ভরা বিশ্ববিদ্যালয়মুখী রাস্তার কারণে এই পথে আসতে ফায়ার সার্ভিসকে পড়তে হয় প্রতিবন্ধকতার মাঝে।
 
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলে আগুন লাগার ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের এরূপ নাজুক অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কা বিরাজ করছে কুবি শিক্ষার্থীদের মাঝেও। তারা বলছেন যেকোনো অগ্নিকাণ্ডে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের জানমালের ক্ষতি। 

Dhaka Post

পাঁচজন শিক্ষার্থী জানায়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলোর বেশির ভাগই মেয়াদ উত্তীর্ণ অথবা ফাঁকা। তারপরও নতুন করে যন্ত্রে ভরা হয় না আগুন নেভানোর রসায়নিকদ্রব্য। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত যেকোনো দুর্ঘটনায় আমরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।’

হলে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র না থাকার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়া বলেন, প্রাধ্যক্ষরা মিলে হল খোলার আগে কী কী বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত সেরকম একটি প্রতিবেদন ট্রেজারার স্যারকে পাঠানো হয়েছে। সেখানে অগ্নিনির্বাপকের ব্যাপারটিও রয়েছে। এই প্রতিবেদনটি সামনের সিন্ডিকেটে (২৬ অক্টোবর) উঠবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ও হল খোলা বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজমান বলেন, হল প্রভোস্টরা একটা লিস্ট দিয়েছে। এটা আজ সিন্ডিকেটে আলোচনা হবে। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছাড়াও এখানে আরো বিষয় রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা দ্রুত এ ব্যাপারটি সমাধান করার চেষ্টা করব।

এমএসআর

Link copied