খুবিকাণ্ডে শিক্ষক নেটওয়ার্কের হুঁশিয়ারি

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) তিন শিক্ষক ও দুই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করলে আগামী সাত ফেব্রুয়ারির পর উপাচার্যের কার্যালয়ে ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
বুধবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে খুবি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের প্রতিবাদে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষে এ ঘোষণা দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।
অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে এর জন্য ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আমার বলতে ইচ্ছে করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে মমার্থ সেটি বুঝতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। এই ব্যর্থহীন উপাচার্য হয়ে তিনি প্রশাসনের সর্বোচ্চ আসনে থাকা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ যদি প্রত্যাহার না হয়, তাহলে আমরা শিগগিরই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব। উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করব এবং দাবিগুলো না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
সমাবেশে অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দিন খান বলেন, আমাদের রাষ্ট্রের যারা শাসক আছেন তারা বক্তৃতায় বলেন, আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে ঢুকে গেছি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য তারা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ তৈরি করবেন। কিন্তু তারা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ তৈরি করবেন কীভাবে, একটা সমাজ জ্ঞানভিত্তিক হতে গেলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সৃজনশীলতা। আর সৃজনশীলতার প্রথম শর্ত হচ্ছে প্রশ্ন, আপনি প্রশ্ন করার কোনো সুযোগ রাখছেন না, প্রশ্ন করার মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে যে সৃজনশীলতার চর্চা হয়, তা আপনারা রোধ করছেন। আপনি ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন করছেন। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা শাসক আছেন তারা নিজেদেরকে আমলা মনে করছেন। যারা রাষ্ট্রের শাসক তারা আমলাকে নিয়ন্ত্রণ করছেন সরকারি চাকরিবিধি দিয়ে। এরকম আমলাতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থা যখন তৈরি হচ্ছে তখন আসলে সৃজনশীলতা, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ, এসব ভণ্ডামি, মকারি ছাড়া আসলে অন্য কোনো কিছুই না। তারই একটা রূপ আমরা দেখতে পেলাম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আচরণের মধ্য দিয়ে।
বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিনজন শিক্ষককে বহিষ্কার করার ক্ষেত্রে যে ভাষা ব্যবহার করেছে এটি অত্যন্ত আপত্তিকর। শিক্ষকরা কোথায় আবেদন করতে পারবে, কোথায় কাজ করতে পারবে, এ ধরনের শাস্তি প্রদান করা কোনো কর্তৃপক্ষের আওতার মধ্যে পড়ে না। বহিষ্কারাদেশ পুনর্বিবেচনা করতে অনুরোধ করব। এ ধরনের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।
এছাড়া অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন- ঢাবির অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রাহাদ, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক অমল ক্লান্তি, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মহিউদ্দিন, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিপিল রায়, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ সাংগঠনিক সম্পাদক অমল ত্রিপুরা।
এফআর