এবার কাফনের কাপড় পরে উপাচার্যের পদত্যাগ চাইলেন শাবি শিক্ষার্থীরা

Dhaka Post Desk

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, শাবি

২২ জানুয়ারি ২০২২, ০৪:০৯ পিএম


অডিও শুনুন

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবিতে টানা তিন দিন ধরে আমরণ অনশন করছেন ২৪ জন শিক্ষার্থী। অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৭ জনকে এরই মধ্যে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  

উপচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আজ কাফনের কাপড় পরে ক্যম্পাসে মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে কাফনের কাপড় পরে মৌন মিছিল বের করেন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। এ সময় প্রতীকী লাশ কাঁধে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করেন তারা। পরে একই স্থানে এসে প্রতীকী লাশ সামনে রেখে শিক্ষার্থীরা কয়েক মিনিট অবস্থান করেন। 

এদিকে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মো. নাজমুল হাসান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অসুস্থ ১৭ জন শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকি ছয়জন শিক্ষার্থীকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এক দফা দাবিতে এখানে আন্দোলনে এসেছি। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব। আমাদের আন্দোলনের অংশ হিসেবেই আজকের এই মৌন কাফন মিছিল। শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মিছিল ও আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩টা থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ২৪ জন শিক্ষার্থী অনশনে বসেন।

Dhaka Post

এর আগে গত রোববার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। 

এ ঘটনায় দুইশ থেকে তিনশ অজ্ঞাত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে- আন্দোলনরত দুই-তিনশ উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী হঠাৎ কর্তব্যরত পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারা সরকারি আগ্নেয়াস্ত্র ধরে টানাটাানি করে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। চারদিক থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়ে। এছাড়া ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। 

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয় ১৪ জানুয়ারি দিবাগত রাতে। তখন শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলে নানা সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান চেয়ে তারা হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদকে ফোন করেন। প্রভোস্টকে ফোন দিলে তিনি বলেন, ‘বের হয়ে গেলে যাও, কোথায় যাবে? আমার ঠেকা পড়েনি।’ শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জরুরি উল্লেখ করলে তিনি বলেন ‘কীসের জরুরি? কেউ তো আর মারা যায়নি!’ 

এরপর প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ছাত্রীরা। প্রভোস্টের পদত্যাগের ওই আন্দোলন শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষের জেরে পরবর্তীতে ভিসির পদত্যাগ আন্দোলনে রূপ নেয়।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাস বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়। তবে ওই নির্দেশনা অমান্য করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

জুবায়েদুল হক রবিন/আরএআর/জেএস

টাইমলাইন

Link copied