৪ ঘণ্টা পর মুক্ত হয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন পাবিপ্রবি উপাচার্য
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন পদে নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে রিজেন্ট বোর্ডের সভা স্থগিত হওয়ার পর অবরুদ্ধ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলী চার ঘণ্টা পর মুক্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশি প্রহরায় ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এম আব্দুল আলীম বলেন, পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রিজেন্ট বোর্ডের সভা উপাচার্যের কক্ষে শুরু হয়। সভায় উপাচার্যের ভাতিজি কানিজ ফাতেমার নিয়োগসহ শতাধিক নিয়োগ, আপগ্রেডেশন ও শিক্ষকদের এমফিল-পিএইচডি অনুমোদনের কথা ছিল। উপাচার্য নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি। তিনি ১০২টি পদে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শিক্ষকদের বিষয়গুলো এড়িয়ে যান।
সভা চলাকালে বিতর্কিত নিয়োগ ও অনিয়ম নিয়ে রিজেন্ট বোর্ডের সদস্যরা প্রশ্ন উত্থাপন করেন। এ সময় উপাচার্য উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। শিক্ষকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হট্টগোল শুরু হলে সভা বাতিল ঘোষণা করেন তিনি। পরে দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষক-কর্মকর্তারা উপাচার্যের কক্ষে তাকে অবরুদ্ধ করেন। বাহির থেকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে খবর পেয়ে রিজেন্ট বোর্ডের অন্যতম সদস্য পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে উপাচার্যের সঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন।
সেখান থেকে বেরিয়ে শামসুল হক টুকু বলেন, শিক্ষকদের দাবিসহ সব বিষয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি রিজেন্ট বোর্ডের জরুরি সভা তিনি আহ্বান করে সংক্ষুব্ধ শিক্ষকদের বিষয়গুলো সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করছি এর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে।
বিকেল ৪টার দিকে শামসুল হক টুকুর এই আশ্বাসে শিক্ষক-কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ উপাচার্যকে মুক্ত করে দেন। পরে পুলিশ ও প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তায় ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন উপাচার্য।
এ বিষয়ে কথা বলতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর বিরুদ্ধে ১০১টি দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত দাবি করে এককভাবে প্রতীকী অনশন করেন বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে উপাচার্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলোর মধ্যে বেশ কিছু অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে ইউজিসি ও তদন্ত কমিটি। অজ্ঞাত কারণে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির পরও তিনি বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
রাকিব হাসনাত/আরএআর