মরদেহ থেকে স্বর্ণালংকার চুরি, আটক ৩

সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত স্কুলশিক্ষিকার হারিয়ে যাওয়া স্বর্ণালংকার উদ্ধারের পাশাপাশি তিনজনকে আটক করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার মিরপুর মহল্লার কালাচাঁন মোড় এলাকায় গত রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) বাস ও ট্রাকের মাঝখানে চাপা পড়ে ছেলে-মেয়েসহ মৃত্যু হয় বনবাড়ীয়া সরকরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ইফরাত সুলতানা রুনীর।
এ সময় তার শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার চুরি হয়ে গেলে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় তিন ডোমকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধায় ডোমের কাছ থেকে স্বর্ণালংকারগুলো উদ্ধার করে পুলিশ।
আটকরা হলেন- ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের ডোম রানা (৩২), সহকারী সুমন (৩৫) ও শাহ আলম (৩০)।
মামলার বাদী নিহতের ভাই মোসফেকুস সালেহীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুর্ঘটনার সময় আমার বোনের সঙ্গে স্বর্ণের একটি চেইন, দুইটি আংটি, দুটি হাতের বালা, একজোড়া কানের দুল ও নাকফুল ছিল। মর্গে থেকে মরদেহ পাওয়ার পর তার শরীরে কোনো স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাহাউদ্দিন ফারুকী ঢাকা পোস্টকে জানান, তিন ডোমকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে নিহত স্কুলশিক্ষিকার স্বর্ণলংকার উদ্ধার করে রাতে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) আটক তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ফরিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, শুধু রানা হরিজন নামে একজন আমাদের ডোম। সে মূলত পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং অতিরিক্ত ডোমের দায়িত্বে আছে। সুমন নামে আরেকজন তাকে সহযোগিতা করে। বাকি অন্যজনকে আমি চিনি না। যেহেতু এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে তাই অবশ্যই ডোমের বিরুদ্ধে নিয়মানুযায়ী প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) স্কুলশিক্ষিকা ইফরাত সুলতানা রুনী ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশাযোগে শহরে যাচ্ছিলেন। এ সময় কালাচাঁন মোড় এলাকায় পৌঁছালে এনায়েতপুর দরবার শরীফ থেকে সিরাজগঞ্জগামী জাহাঙ্গীর পরিবহনের একটি বাস সামনের একটি ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে রিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে রিকশাটি ট্রাকের পেছনে ঢুকে দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই রুনী ও তার ছেলে নিহত হয়। এ সময় গুরুতর আহত হয় তার মেয়ে শিশু সোয়াবা রহমান ও রিকশাচালক চাঁন মিয়া। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসক শিশু সোয়াবা রহমানকেও মৃত ঘোষণা করেন।
শুভ কুমার ঘোষ/আরএআর