যৌতুকের দাবিতে ঘরে আটকে গৃহবধূকে নির্যাতন, উদ্ধার করল পুলিশ

রংপুরে যৌতুকের দাবিতে হালিমা পারভীন (৪৫) নামে এক গৃহবধূকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে গৃহবন্দী করে ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে এ নির্যাতন চালায়। খবর পেয়ে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
বুধবার (৯ মার্চ) মধ্যরাতে নগরীর ধাপ পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন শ্যামলী লেন এলাকার অনুপম হাউসে এ ঘটনা ঘটে।
বর্তমানে ওই গৃহবধূ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
জানা যায়, ২০০০ সালে নগরীর ধাপ শ্যামলী লেন এলাকার ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বাবুর সঙ্গে পীরগঞ্জের হালিমা পারভীনের বিয়ে হয়। এরপর থেকে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ওই গৃহবধূকে বিভিন্ন সময় বাবার বাড়ি থেকে ২০ লাখ টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকে। স্বামী-সংসারের কথা চিন্তা করে পারভীন বিভিন্ন সময়ে কয়েক লাখ টাকা এনে দেন। তারপরও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকে। চলে পারভীনের ওপর নির্যাতন। এভাবে প্রায় ২২ বছর স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অমানবিক নির্যাতনের স্বীকার হয়ে আসছেন হালিমা পারভীন।
সবশেষ বুধবার (৯ মার্চ) রাতে ব্যবসার পুঁজি বাড়ানোর অযুহাতে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করেন আলমগীর। এতে আপত্তি জানালে পারভীনের ওপর পরিবারের সবাই মিলে শারীরিক নির্যাতন চালায়।
চিকিৎসাধীন হালিমা পারভীন বলেন, সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে এতদিন সংসার করে আসছি। কিন্তু স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের নির্যাতন বন্ধ হয়নি। যৌতুকের জন্য প্রায়ই তারা শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করে। বুধবার রাতেও আমাকে অনেক নির্যাতন করে এবং বাসায় বন্দি করে রাখে। উপায় না পেয়ে আমি মোবাইলে আমার ভাই-বোনকে বিষয়টি জানাই। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ব্যাপারে নগরীর ধাপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মজনু মিয়া বলেন, আমরা ওই গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়েছি। বর্তমানে তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে নির্যাতনের অভিযোগ প্রসঙ্গে পারভীনের স্বামী আলমগীর হোসেন বাবুর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটা সাংসারিক বিষয়। এ অভিযোগ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই