১৮ বার ছুরিকাঘাত করে শরীফের মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘাতকরা

ময়মনসিংহ নগরীর চরপাড়া এলাকায় শরীফ চৌধুরী (২১) নামে এক যুবককে নৃশংসভাবে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় গত বুধবার। ৪৫ সেকেন্ডের সেই কিলিং মিশনে ১৮ বার ছুরিকাঘাত করে শরীফের মৃত্যু নিশ্চিত করে পাঁচ ঘাতক। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তদন্তে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঘটনার দুই দিনের মাথায় শুক্রবার (৮ এপ্রিল) ভোররাতে হত্যায় জড়িত তিন আসামিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ময়মনসিংহ নগরীর সানকিপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে শান্ত ইসলাম (২০), সদর উপজেলার পরানগগঞ্জ ভাটিপাড়া এলাকার কেরামত আলীর ছেলে আরিফুজ্জামান আরিফ (২২), তারাকান্দা উপজেলার নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. রাকিবুল হাসান তপু (২৫)।
ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানিয়েছে পিবিআই।
শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে ময়মনসিংহ পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস।
তিনি বলেন, নিহত শরীফ চৌধুরী এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা পরস্পর বন্ধু ছিল। তারা এলাকায় একসঙ্গে চলাফেরা করত। চরপাড়া এলাকায় ফুটপাতে অস্থায়ী দোকান থেকে সাপ্তাহিক চাঁদা তুলত তারা। সম্প্রতি নিহত শরীফ আলাদা গ্রুপ করে চাঁদার টাকা তোলা শুরু করে এবং চাঁদা আদায়ে নিজের আধিপত্য বজায় রাখে। এতে অন্যরা ক্ষুব্ধ হয় এবং তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

তিনি আরও বলেন, বুধবার রাতের ওই কিলিং মিশনে অংশ নেয় পাঁচজন। তারা চরপাড়ার চৌধুরী ক্লিনিকের গলিতে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকে। শরীফ বাসায় যাওয়ার জন্য গলিতে ঢুকতেই তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে ফেলে রেখে যায় তারা। শরীফের বুকে-পিঠে অন্তত ১৮ বার ছুরিকাঘাত করে তারা। মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে কি না তা দেখার জন্য হত্যাকাণ্ডের কিছক্ষণ পর আবার ঘটনাস্থলে আসে তারা। পরে মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে পালিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারকৃত আরিফুজ্জামান আরিফের বাড়ির পেছন থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি চাকু উদ্ধার করা হয় বলে জানান গৌতম কুমার বিশ্বাস।
শরীফ হত্যার ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) রাতে তার বাবা শহিদ মিয়া বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
নিহত শরীফ ময়মনসিংহের গৌরীপুর সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি গৌরীপুর উপজেলার টাঙ্গুয়া এলাকায় হলেও নগরীর চরপাড়া এলাকায় সপরিবারে থাকতেন তারা।
উবায়দুল হক/আরএআর/জেএস