পর্দার বাইরে ইভিএম রেখে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করার অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ইভিএম মেশিন পর্দার বাইরে রেখে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে রামগতি পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আলেকজান্ডার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আলেকজান্ডার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের নারী ও পুরুষ বুথে ভোটারদের নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। ইভিএম নিয়ে বসে থাকা আওয়ামী লীগ নেতারা নিজেদের নৌকা প্রতীকের এজেন্ট দাবি করেছেন। তবে একটি বুথেই নৌকার তিন থেকে চারজন করে এজেন্ট দেখা গেছে। অপরদিকে একটি বুথেও ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্ট পাওয়া যায়নি। তারা আসছেন কি-না তাও বলতে পারছেন না সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. ইউসুফ ও আবদুর রাজ্জাক।
এদিকে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করার চিত্র ক্যামেরায় ধারণ করতে গেলে দল থেকে এই কেন্দ্রের দায়িত্ব পাওয়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আবদুজ্জাহের সাজু সাংবাদিকদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে সাংবাদিকরা তার দিকে ক্যামেরা ঘুরালে তিনি সটকে পড়েন।
এ নির্বাচনে হাতপাখা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আবদুর রহিম বলেন, ইভিএম কালো পর্দার ভেতরে থাকার কথা থাকলে এখন বাইরে। আওয়ামী লীগের নেতারা প্রভাব খাটিয়ে বাইরে ইভিএম রেখে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করছেন। এনিয়ে প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নীরব ভূমিকা পালন করছেন।
তবে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. আহসান বলেন, বুথের কালো পর্দার ভেতরে ইভিএম থাকবে। ভোটাররা গোপনে ভোট দেবেন। বাইরে ইভিএম রেখে ভোট দেওয়ার বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন না। এ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এই প্রথম লক্ষ্মীপুরে ইভিএমে ভোটগ্রহণ চলছে। রামগতি পৌরসভায় ২০ হাজার ৯০৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। এখানে মেয়র পদে নৌকা প্রতীকে মেজবাহ উদ্দিন মেজু, ধানের শীষে রামগতি পৌরসভা বিএনপির সভাপতি সাহেদ আলো পটুসহ ছয়জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডের ১০টি কেন্দ্রে ৯ জন ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে দেশের ২৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি ৬১ পৌরসভায় ও তৃতীয় ধাপে ৬২ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ ধাপে ৫৫টি পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম ধাপে দেশের ৩১টি পৌরসভায় নির্বাচন হবে।
তিন ধাপে আওয়ামী লীগের ৬৯ জন, বিএনপির ৯ জন ও স্বতন্ত্র ২৫ জন প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন। দলীয় প্রতীকে এ নির্বাচনে মেয়র পদে তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৪৬ জন, বিএনপির তিনজন ও স্বতন্ত্র ১৪ জন বিজয়ী হন।
দ্বিতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৪৫ জন, বিএনপির চারজন, জাতীয় পার্টির একজন, জাসদের একজন ও আটজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হন।
প্রথম ধাপে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীদের মধ্যে ১৮ জন, বিএনপির ধানের শীষের দুইজন এবং তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র পদে বিজয়ী হন।
হাসান মাহমুদ শাকিল/আরএআর