গ্রামপুলিশ সদস্যকে মারধরের অভিযোগে এসআই প্রত্যাহার

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে গ্রামপুলিশের এক সদস্যকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে হোসাইন মোহাম্মদ আরাফাত নামে এক উপ-পরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে তাকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) রাতে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের মিয়া। এর আগে ওই দিন দুপুরে থানায় সাপ্তাহিক হাজিরা দিতে গেলে আবু তাহের নামে গ্রামপুলিশ সদস্যকে মারধর করেন এসআই হোসাইন মোহাম্মদ আরাফাত।
পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আবু তাহের উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নে গ্রামপুলিশের সদস্য। তিনি ইউনিয়নটির পানান এলাকার দায়িত্বে রয়েছেন। প্রতি সোমবার থানায় গিয়ে গ্রামপুলিশের সদস্যদের সাপ্তাহিক হাজিরা দিতে হয়। সোমবার দুপুরে থানা চত্বরে গিয়ে সাপ্তাহিক হাজিরা দিতে যান আবু তাহের। থানায় সেই হাজিরা গ্রহণ করছিলেন এসআই হোসাইন মোহাম্মদ আরাফাত। জাটিয়া ইউনিয়ন থেকে কে হাজির হয়েছেন ডাক দেওয়ার পর এগিয়ে যান তাহের। ওই সময় তাকে দেখে পূর্বের একটি ঘটনার জেরে তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন এসআই আরাফাত।
আবু তাহেরের অভিযোগ, আমি তার সামনে যেতেই ড্রেসের কলার ধরে আমাকে ভেতরে নিয়ে গিয়ে বেত দিয়ে পিটুনি শুরু করেন। পেটাতে পেটাতে একপর্যায়ে সেই বেত ভেঙে যায়। আমি তখন মারধরের কারণ জানতে চাইলে বলেন, আমি তোকে একদিন কল দিয়েছিলাম তুই সেই কল ধরিসনি কেন। আমি তখন বলেছি, আমার মোবাইলটাতে একটু সমস্যা ছিল। আর আপনি যে কল দিয়েছেন সেটা তো আমি জানতাম না।
তিনি আরও বলেন, মূলত একটি মামলার তদন্তের জন্য আমার সহযোগিতা দরকার ছিল৷ কিন্তু আমাকে না পেয়ে তিনি আমার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। এ কারণে আমাকে পেয়ে মারধর করেছেন। আমার মুঠোফোনটিও কেড়ে নেন। এমনকি চাকরি খেয়ে ফেলারও হুমকি দেন তিনি। ওই অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ ব্যাপারে জানতে এসআই হোসাইন মোহাম্মদ আরাফাতের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
জাটিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা দফাদার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, এক মেয়ে অপহরণের অভিযোগের তদন্ত নিয়ে সুটিয়া বাজারে এসআই আরাফাতের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল তাহেরের। কিন্তু দেখা না করায় এমনটি করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাফিজা জেসমিন জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ওসিকে তদন্ত করে জানাতে বলা হয়েছে। এসআইয়ের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলেও তিনি স্বীকার করেননি। জানানো হয়েছে বেশ কিছু কারণে এলাকায় গেলে ওই গ্রামপুলিশকে পাওয়া যেত না।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের মিয়া বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে থানা থেকে এসআই হোসাইন মোহাম্মদ আরাফাতকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
উবায়দুল হক/এসএসএইচ