আমাকে হত্যার জন্য ৫০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে : কাদের মির্জা

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও বহুল আলোচিত বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, আমাকে হত্যার জন্য ৫০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে চট্টগ্রামের আ জ ম নাছিরও জড়িত আছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আজ বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে বসুরহাট থানার সামনে উপস্থিত হয়ে থানা ঘেরাও কর্মসূচি ও হরতাল প্রত্যাহার করেন। এ সময় তিনি তিন দফা দাবি উপস্থাপন করেন।
এই দাবিগুলো না মানা হলে ১৮ ফেব্রুয়ারি বসুরহাটে ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস হরতাল পালন করা হবে। এরপরও যদি দাবি না মানা হয়, তাহলে ১৯ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল পালন করা হবে।
কাদের মির্জার দাবিগুলো হলো― নোয়াখালীর অপরাজনীতি বন্ধ করতে হবে। যত হামলা হয়েছে, হামলাকারীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ডিসি, এসপি ও বসুরহাট থানার ওসিকে প্রত্যাহার করতে হবে। নোয়াখালীর অপরাজনীতির বিরুদ্ধে সব সময় কথা বলে যাবেন। নোয়াখালী ৪ আসনের সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী ও ফেনীর সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী অপরাজনীতির মূল হোতা বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরো বলেন, আমার ওপর বিভিন্ন সময় হামলায় হয়েছে। আমার পরিবার, আমার কাউন্সিলরদের ওপর এবং আমার সঙ্গে যারা আছে, তাদের ওপর বিভিন্ন সময় হামলা হয়েছে। আমাকে ও আমার পরিবারকে হত্যার জন্য ৫০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে চট্টগ্রামের আ জ ম নাছির উদ্দীনও জড়িত আছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় আবদুল কাদের মির্জা ফেনীর দাগনভূঞা ও চট্টগ্রামে তার ওপর হামলা ও হত্যার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বসুরহাট রূপালী চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করেন। যাতে তিনি ফেনীর সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, নোয়াখালীর সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীসহ দাগনভূঞা ও সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অভিযুক্ত করেন।
সংবাদ সম্মেলন চলাকালে উপজেলার টেকের বাজারে আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে একটি সমাবেশ করেন চরকাঁকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ফখরুল ইসলাম। কাদের মির্জা কোম্পানীগঞ্জকে জিম্মি করে রেখেছেন উল্লেখ করে তিনি বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। পরে সমাবেশ শেষে সেখানে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়।
সমাবেশের খবরে কাদের মির্জার একদল সমর্থককে নিয়ে টেকের বাজারে যান। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে থানা থেকে পুলিশ গিয়ে ফখরুল ইসলামকে আটক করেন। এ সময় সমর্থকরা পুলিশের কাছ থেকে ফখরুলকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
এ ঘটনার প্রতিবাদে কাদের মির্জা রাত সাড়ে ৮টার দিকে কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে থানার সামনে অবস্থান নেন। সেখানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন ও কোম্পানীগঞ্জের ওসির প্রত্যাহারের দাবি জানান। পাশাপাশি সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ও একরামুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। একই সঙ্গে দাবি আদায়ে বুধবার কোম্পানীগঞ্জে হরতালের ডাক দেন।
পরে একই দাবিতে রাত সাড়ে ৮টর দিকে কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার সামনে অবস্থান নিয়ে থানা ঘেরাও ও অবরোধ করেন কাদের মির্জা। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তিনি সেখানে অবস্থান করেন। তবে নেতাকর্মীরা রাতভর থানা অবরোধ করে রাখেন।
হাসিব আল আমিন/এনএ