উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি

ভূ-গর্ভস্থ পানির যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে রাজশাহী অঞ্চলে। উজানে ফারাক্কার প্রভাবে পানিশূন্য পদ্মা। খাল-বিলগুলোও মৃতপ্রায়। এমন পরিস্থিতিতে এ অঞ্চলকে মরুকরণের হাত থেকে রক্ষা করতে ‘উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প’ বাস্তবায়নের দাবি উঠেছে।
রোববার (৫ জুন) দুপুরের দিকে নগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানানো হয়। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) রাজশাহী জেলা কমিটি এই মানববন্ধন আয়োজন করে।
ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে বক্তারা বলেন, রাজশাহীসহ পুরো উত্তরাঞ্চলের পাতাল প্রায় পানিশূন্য। এটি আমাদের কথা নয়; সরকারি সংস্থার জরিপেই এ চিত্র উঠে এসেছে। আমরা দুই দশক ধরে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছি।
কিন্তু আজও তা আলোর মুখ দেখেনি। এর অন্যতম কারণ-আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। এ অঞ্চলকে মরুকরণের হাত থেকে রক্ষা করতে অবিলম্বে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানাই।
বক্তারা বলেন, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে এখন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) গভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলে চাষিদের সরবরাহ করে। এতে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিনিয়ত নিচে নামছে। এই সংকট কাটাতে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্পের পরিকল্পনা করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এটি বাস্তবায়ন হলে ৭৪ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমির চাষাবাদ সম্ভব হবে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার করে।
পদ্মা নদীকে বাঁচিয়ে রাখার দাবি করে বক্তারা বলেন, উন্নয়নের পূর্বশর্ত পানি। কিন্তু আমাদের পদ্মা নদীতে পানি নেই। চার বছর পরই ফারাক্কা চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগেই পানির নায্য হিস্যা নিশ্চিত করে নতুন চুক্তি করতে হবে।
পদ্মায় প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হবে। তা না হলে কৃষিভাণ্ডার নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা অনাহারে থাকব। দেশ খাদ্য সংকটে পড়বে। তাই পদ্মায় পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। বাস্তবায়ন করতে হবে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প।
বাপার জেলা কমিটির সহসভাপতি নারী নেত্রী সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, রফিকুল ইসলাম মিলন, আদিবাসী নেতা সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম, সালাউদ্দীন খান, তরুণ সংগঠক গোলাম নবী রনি, আল-আমিন বিন আরমান, সুফিয়া বেগম, জাহিদ হাসান, শ ম সাজু প্রমুখ।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরআই