বগুড়ায় দিনেদুপুরে যুবককে কুপিয়ে খুন

বগুড়ায় দিনেদুপুরে প্রকাশ্যে রবিন হাসান (২১) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে শহরতলীর ঘুনিয়াতলা বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রবিন ভাটকান্দি দক্ষিণপাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে। পেশায় রঙ মিস্ত্রি রবিন একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। কয়েক মাস কারাভোগের পর সম্প্রতি তিনি জামিনে মুক্ত হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ২টার দিকে ঘুনিয়াতলা বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুপুর দেড়টার দিকে স্কুল মাঠে রবিনকে কুপিয় হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। হত্যাকাণ্ডের পর পরই ওই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে হত্যার মোটিভ জানাতে পারেনি। তবে পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা পূর্ববিরোধের জের ধরে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডের পর ঘুনিয়াতলা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘুনিয়াতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজার রহমান বলেন, চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৬৫ জন শিক্ষার্থীর বিদায় অনুষ্ঠান ছিল বৃহস্পতিবার। দুপুর ২টা থেকে অনুষ্ঠান শুরু করার জন্য মঞ্চও নির্মাণ করা হয়েছিল। দুপুর দেড়টার দিকে আমরা যখন জোহরের নামাজ পড়ছিলাম তখন হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। মঞ্চ থেকে পূর্ব-উত্তর কোণে পরিত্যক্ত একটি টয়লেটের কাছে ছেলেটিকে খুন করা হয়। পরে নামাজ শেষ হওয়ার পর জানতে পারি একদল বহিরাগত যুবক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত টয়লেটের কাছে এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাকে হত্যা করা হয়েছে এবং যারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত তারা সবাই বহিরাগত।
তবে ঘুনিয়াতলা এলাকার সাজেদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, বিদ্যালয়ের যে স্থানে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে, পরিত্যক্ত সেই টয়লেটসহ সংলগ্ন এলাকায় দুর্বৃত্তরা দিনে-রাতে অসামাজিক কার্যকালাপ করে। পরিত্যক্ত ওই টয়লেট ভেঙে দেওয়ার জন্য ইতোপূর্বে প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করা হলেও তিনি তা কর্ণপাত করেননি।
নিহতের ছোট বোন খুশি জানান, রবিন বাসায় শুয়ে ছিলেন। দুপুর ১টার তার দুই বন্ধু বাসা থেকে ডেকে নিয়ে বিদ্যালয় মাঠে যায়। কিছুক্ষণ পরেই তিনি খবর পান তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে।
বগুড়া সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, ৫/৬ জন দুর্বৃত্ত ধারালো অস্ত্র নিয়ে রবিনের ওপর হামলা। তারা তার মাথায় এবং পায়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, রবিন হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। কয়েক মাস কারাভোগ করার পর সম্প্রতি তিনি জামিনে মুক্ত হন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পূর্ববিরোধের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তদন্ত চলছে। খুব শিগগিরই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।
আরএআর