শিশু নাইমের গরুটি কি বিক্রি হলো

বাড়ির একমাত্র ও প্রিয় গরু বিক্রি করতে একাই মঙ্গলবার (৫ জুলাই) বিকেলে হবিগঞ্জ শহরের পৌর পশুর হাটে এসেছিল শিশু নাইম মিয়া। তবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিক্রি হয়নি তার গরুটি। নাইম গরুটির দাম চেয়েছিল ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু ক্রেতা দাম বলেছিল ২৭ হাজার। দাম কম বলায় সন্ধ্যা পর্যন্ত গরু নিয়ে হাটেই দাঁড়িয়ে ছিল নাইম।
নাইমের বাড়ি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম ছায়েদ মিয়া। তিনি পেশায় দিনমজুর। নাইম ওই গ্রামের স্থানীয় একটি হাফিজিয়া মাদরাসায় ৮ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। অভাবে সংসারে ভেবেছিল কোরবানি ঈদে গরুর দাম বেশি পাবে তাই প্রিয় গরু নিয়ে হাটে এসেছিল নাইম।
মঙ্গলবার বিকেলে পশুর হাটে কথা হয় নাইম মিয়ার সঙ্গে। সে জানায়, বেলা ১১টায় গরু নিয়ে বাড়ি থেকে দুই ঘণ্টা হেঁটে হবিগঞ্জের হাটে এসেছে। সঙ্গে প্রতিবেশী সম্পর্কিত একজন চাচাও গরু বিক্রি করার জন্য এসেছেন। তার সঙ্গেই একাই নাইম মিয়া গরু নিয়ে এসেছে।
এই সময়ের মধ্যে সে কিছু খেয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করলে সে বলে, দুইডা সিঙ্গারা খাইছলাম। অখন গরু রাইক্যা যাওনের উফায় নাই।
একই হাটে গরু বিক্রি করতে আসা নাইমের চাচা বলেন, মাদরাসা থেকে ফিরেই নাইমের প্রথম কাজ ছিল গরুটার জন্য ঘাস সংগ্রহ করা। এরপর রাতে গরুকে ঘরে ঢুকানো, সকালে ঘর থেকে বের করা, এরপর গরুকে খাবার দেওয়াসহ সব কাজ করতো সে। এতে করে গরুটির সঙ্গে নাইমের এক ধরনের মায়ার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।
নাইম মিয়া জানায়, দুই বছর ধরে তারা গরুটিকে লালন-পালন করছে। টাকার টানাটানির কারণে গরুটি বিক্রি করতে হচ্ছে। একমাত্র গরুটি বিক্রি করতে হবে এজন্য নাইমের মন খারাপ। তবে এই গরু বিক্রি করে একটা বাছুর কেনার ইচ্ছা আছে বলেও জানায় সে।
এমএএস