ঐতিহ্য ধরে রেখে ফরিদপুরের ১৩ গ্রামে ঈদ উদযাপিত

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশের এক দিন আগেই ঈদুল আজহা উদযাপন করেছেন ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার ১৩ গ্রামের তিন সহস্রাধিক মানুষ।
শনিবার (৯ জুলাই) সকালের বিভিন্ন সময়ে বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ও রুপাপাত ইউনিয়নের কাটাগড়, সহস্রাইল, মাইটকোমড়া, ভুলবাড়িয়া, রাখালতলী, বারাংকুলা, দড়ি সহস্রাইল এবং আলফাডাঙ্গা উপজেলার ইছাপাশা ও শুকুরহাটাসহ ১৩টি গ্রামের মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করেন।
আলফাডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সহকারি অধ্যাপক বোয়ালমারীর কাটাগড় গ্রামের বাসিন্দা মাহিদুল হক মূলত এ সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন।
তিনি জানান, তাদের পূর্বপূরুষ থেকে তারা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মির্জাখিল পীরের তরিকাপ্রাপ্ত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার হজরত ইয়াছিন আলী (রহ.) পীরের অনুসারী। যারা মির্জাখিল পীরের অনুসারী, তারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, সব মিলিয়ে হাজার তিনেক মানুষ আছেন, যারা আমরা চট্টগ্রাম পীরের অনুসারী। আগে প্রায় ২০ হাজার মানুষ ছিল। নতুন প্রজন্মের অনেকে এ নিয়ম মানতে চায় না।

কাটাগড় গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মশিউল আজম বাবু মিয়া বলেন, প্রায় শত বছরে ঐতিহ্য ধরে সৌদির সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও দুই ঈদ পালন করে আসছেন তারা।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের সাদ্রা হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ আবু ইছহাক ১৯২৮ সাল থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে সর্বপ্রথম ধর্মীয় রীতিনীতি প্রচলন শুরু করেন। সে মোতাবেক এবার আমাদের সস্রাইল, মাইটকুমড়া ও রাখালতলী এই তিনটি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলফাডাঙ্গা গ্রামের মুসল্লিরাও সস্রাইলে এসে নামাজ আদায় করেছেন।
রাখালতলী পুরাতন মসজিদের ইমাম জয়নাল ফকির বলেন, আমাদের দুই উপজেলার তিনটি জামাতে কয়ে শ মানুষ নামাজ আদায় করেছেন। এটা আমাদের যুগ যুগ ধরে চলে আসছে।
বোয়ালমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল ও পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য ধরে রেখে দুই উপজেলার প্রায় ১৩টি গ্রামের মানুষ এক দিন আগে রোজা ও দুই ঈদ পালন করা রেওয়াজ পালন করে আসছে।
জহির হোসেন/এনএ