ধোঁয়ায় পথ হারিয়ে বাস-ট্রাক সংঘর্ষ, চালক নিহত

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ভাগাড়ের আগুন থেকে ওঠা ধোঁয়ায় পথ হারিয়ে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী বাইপাস সড়কের সিটিহাট এলাকায় এই দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ট্রাকচালক জামাল উদ্দিন ওরফে সবুর (৩৮)।
নিহত জামাল উদ্দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ উজিরপুর এলাকার বাসিন্দা। এই ঘটনায় ট্রাকের হেলপার ও বাসযাত্রীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৮ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদ্দেশে যাচ্ছিল। আর যাত্রীবাহী বাসটি গন্তব্য ছিল সিরাজগঞ্জ।
রামেক হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ এএসআই রুহুল আমীন বলেন, দুর্ঘটনার পর অন্তত ১৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। পরে জামাল উদ্দিন নামের একজন মারা যান। এ ছাড়া অন্তত ৮ জন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালের ৮, ৩১ ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবদুর রাউফ বলেন, মহাসড়কের পাশেই ভাগাড়ে আগুন জ্বলছিল। সেখান থেকে ওঠা ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে পথ হারিয়ে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ বাঁধে। খবর পেয়ে দমকলকর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত রামেক হাসপাতালে পৌঁছে দেন।
তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনার কারণ ভাগাড়ের আগুন থেকে উঠে আসা ধোঁয়া। দুর্ঘটনার সময় সেখানে সিটি করপোরেশনের কেউ ছিলেন না। ময়লার স্তূপে ইচ্ছাকৃত আগুন দেওয়ারও প্রমাণ মেলেনি। হয়তো পথচারীদের কেউ ধূমপান শেষে সিগারেট ফেলেছেন ময়লার স্তূপে। বাতাসে তা থেকে আগুন ধরে যায়। ময়লা-আবর্জনা থাকায় শিখা না হয়ে কেবল ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠছিল। দুর্ঘটনার পর দমকলকর্মীরা ভালোভাবে আগুন নিভিয়ে ফেলেন।
ধোঁয়ার কারণে এই দুর্ঘটনা বলে জানিয়েছেন নগরীর শাহমখদুম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আইনি প্রক্রিয়া শেষে বিকেলে মরদেহ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
তবে এই আগুনে নগর কর্তৃপক্ষের দায় অস্বীকার করেছেন রাসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন। তিনি বলেন, ‘রাসিক কখনোই কোনো ময়লা-আবর্জনায় আগুন দেয় না। হয়তো অন্য কেউ আগুন দিয়ে থাকতে পারে। রাসিকের মূল ডাম্পিং গ্রাউন্ডে আমাদের লোক থাকে। বাইরে কেউ থাকেন না। সেখানে আগুন কীভাবে লাগল? আমরা জানি না। তবে এর পেছনে কারা তা পুলিশ খতিয়ে দেখবে।’
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএসআর