২০ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে সড়ক ছাড়লেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সামনের সড়কের অবরোধ প্রত্যাহার করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে ২০ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে এ সড়ক অবরোধ স্থগিত করেন তারা।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মাহবুবুর রহমান ভূইয়ার আশ্বাসে ২০ ঘণ্টার জন্য আন্দোলন স্থগিত করা হয়।
ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মাহবুবুর রহমান ভূইয়া বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা সমস্যাটি দ্রুত সমাধানের জন্য কাজ করছেন এবং আমাদের আশ্বস্ত করেছেন আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনার একটি সুরাহা হবে। ব্যাপারটি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জানিয়ে রাস্তা থেকে সরে আসতে অনুরোধ করলে তারা আমার ডাকে সাড়া দেন এবং শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরে যান।
আরও পড়ুন : ওসমানী মেডিকেলের ২ শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় মামলা
শিক্ষার্থীরা অবরোধকালে পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। তারা বলেন, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত কেন প্রশাসন জবাব চাই’, সন্ত্রাসীদের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘লজ্জা নাই লজ্জা নাই, প্রশাসনের লজ্জা নাই’ বলে স্লোগানে মুখর করে তোলেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের পরিচালক আমাদের আশ্বস্ত করেছেন এবং আমাদের দাবি আদায়ের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন। তাই আমরা আজকের দিনের মতো সরে এলাম। তবে আমরা আলটিমেটাম দিচ্ছি। যদি আগামীকাল সকাল ১০টার মধ্যে মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করা না হলে বৃহৎ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে এবং হাসপাতালের বহির্বিভাগের সেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আরও পড়ুন : দুই অভিযুক্ত আটক হলেও রাস্তা ছাড়েননি আন্দোলনকারীরা
এর আগে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে ওসমানী মেডিকেল কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। এ সময় রাস্তার উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তির শিকার হতে হয় হাসপাতালের সেবাগ্রহীতা ও সাধারণ মানুষকে।
অবরোধকালে শিক্ষার্থীরা হাতে স্টাম্প নিয়ে যানবাহন চলাচলের গতি রোধ করতে দেখা যায়। এমনকি তারা অ্যাম্বুল্যান্স চলাচলেও বাধা সৃষ্টি করেন বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা মতিউর রহমান বলেন, এই ভরদুপুরে এভাবে সড়ক অবরোধ করে রাখা বেআইনি। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করার নাম আন্দোলন নয়। কোনো দাবিদাওয়া থাকলে তারা ক্যাম্পাসে গিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জানাতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় আন্দোলনে যান ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের হয়ে সেবা বন্ধ রেখে হাসপাতাল ছেড়ে রাস্তায় নামেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন : শিক্ষার্থীদের মারধরের প্রতিবাদে ওসমানী মেডিকেলের সব ফটক বন্ধ
ঘটনার পর হামলায় জড়িত দুজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। সেই সঙ্গে ছাত্রদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতাল ও কলেজ প্রশাসন দুটি মামলা করে। দুটি মামলায় এজাহারনামীয় আটজনকে আসামি করে অজ্ঞাত আরও তিন-চারজনকে অভিযুক্ত রাখা হয়।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পুলিশ প্রশাসন, কলেজ ও হাসপাতাল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈঠকে বসে তাদের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নিলেও অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
মাসুদ আহমদ রনি/এনএ