রাজসিক বিদায়েও এসপির জন্য কাঁদলেন এএসপি

লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) ড. এএইচএম কামরুজ্জামানকে ফুল দিয়ে সজ্জিত গাড়ি ও ফুলের দঁড়ি দিয়ে গাড়ি টেনে রাজসিক বিদায় জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে সদ্য পদোন্নতি পাওয়ায় বিদায়বেলা কামরুজ্জামান জেলা পুলিশের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের ভালোবাসায় সিক্ত হন।
এসপির রাজসিক বিদায়েও কাঁদলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) পলাশ কান্তি নাথ। দক্ষতার সহিত সহকর্মীদের নিয়ে একাগ্রচিত্তে জেলাবাসীর জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন কামরুজ্জামান।
এভাবে রাজসিক বিদায় এর আগে অন্য কোনো এসপিকে দেওয়ার নজির নেই। সচেতন মহলের ভাষ্য, এসপি কামরুজ্জামান একজন চৌকস কর্মকর্তা ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও পোস্ট দেওয়া কোথাও কোনো অন্যায়ের তথ্য পেলে তাৎক্ষণিক তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিয়েছেন। করোনাকালীন বিভিন্ন জনের দেওয়া তথ্যে মানুষের বাড়িতে গোপনে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন।

দায়িত্ব পালনকালে তিনি বিভিন্ন মামলার আসামি গ্রেপ্তার ও রহস্য উদঘাটন দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার কৃতিত্ব স্থাপন করেছেন।
জেলা পুলিশ জানায়, কামরুজ্জামান কুষ্টিয়া জেলার বাসিন্দা। প্রায় ৩ বছর ১ মাস তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) পদে পদোন্নতি পান।

ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার হিসেবে যোগদানের কথা রয়েছে তার। সেই সূত্রে তিনি নতুন জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বিদায় নেন।
অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, দীর্ঘদিন কামরুজ্জামান স্যারের সঙ্গে কাজ করেছি। বিদায় দিতে ইচ্ছে হচ্ছিল না।

অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি ঝরেছে। দায়িত্বকালে তার দিকনির্দেশনাগুলো সফলতা এনে দিয়েছে। এ জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তার কৃতিত্ব পাহাড়সম।
বিদায় বেলায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ড. এএইচএম কামরুজ্জামান বলেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজির আহমেদ ও সহধর্মিনী জীশান মীর্জা স্যার আমার মাধ্যমে সদর উপজেলার সুতার গোপতা এলাকা নদী ভাঙন কবলিত মানুষের জন্য গণকবর নির্মাণ করেছেন। এটি আমার সারাজীবনের অনন্য স্মৃতি।

লক্ষ্মীপুরের মানুষকে ভালোবেসে ফেলেছি। তাদেরকে কখনোই ভুলব না। লক্ষ্মীপুরে দীর্ঘ কর্মজীবনে সহকর্মীদের সর্বোচ্চ সহযোগীতা পেয়েছি।
হাসান মাহমুদ শাকিল/আরআই