রাতে স্কুলশিক্ষিকার সঙ্গে পরিচয়, সকালে দলবেঁধে ধর্ষণ

মেহেদি অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজার চান্দের পাড়ায় স্কুলশিক্ষিকাকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাটি পরিকল্পিত। আগের রাতেই করা হয় ধর্ষণের পরিকল্পনা। যার বিয়ে হয় তার আপন মামা প্রধান আসামি বেদার মিয়া। তিনি পেশাদার ইজিবাইক (টমটম) চালক। তার পরিকল্পনাতেই ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে।
বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে র্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর সহকারী পরিচালক এএসপি নিত্যানন্দ দাশ।
তিনি জানান, প্রধান আসামি বেদার মিয়ার সঙ্গে ছিলেন, বেলাল উদ্দিন (রাজমিস্ত্রি) ও মোস্তাক মিয়া (ভিডিওম্যান)। তারা ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। আরেকজন সহায়তাকারী ছিলেন। তিনি পলাতক।
গত ১৮ আগস্ট রাতে কক্সবাজার সদরের পিএমখালীর মালিপাড়া থেকে ওই শিক্ষিকা তার এক ভাগনির মেহেদি অনুষ্ঠানে যান। সেখানে বেদার মিয়া নামে একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ওই স্বজনের বাড়ি থেকে ইজিবাইকে করে নিজবাড়িতে ফিরছিলেন ভুক্তভোগী। এ সময় ঝিলংজা ইউনিয়নের বাংলাবাজার ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে বেদার ও তার সহযোগীরা তাকে জোরপূর্বক আরেকটি ইজিবাইকে তুলেন। পরে ওই ইউনিয়নের চান্দের পাড়ার একটি নির্মাণাধীন ভবনের নীচতলায় আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মেহেদি অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের বাংলাবাজার ব্রিজ এলাকায় এক স্কুলশিক্ষিকা সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। তবে সোমবার (২২ আগস্ট) রাতে এ বিষয়ে মামলা নেয় পুলিশ।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত মো. সেলিম উদ্দিন জানান, গত ১৮ আগস্ট রাতে কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের মালিপাড়া এলাকা থেকে ভাগনি সম্পর্কের একজনের মেহেদি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন এক স্কুলশিক্ষিকা। সেখানে পরিচয় হয় পিএমখার ছনখোলা ইউনূছঘোনা এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে বেদার মিয়ার (২৮) সঙ্গে। এ সময় কিছুক্ষণ কথাও বলেন তারা। পরে কথা হয় আরও অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনের সঙ্গে।
পরদিন ১৯ আগস্ট সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ওই স্বজনের বাড়ি থেকে স্কুলশিক্ষিকা ইজিবাইক (টমটম) যোগে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে ঝিলংজা ইউনিয়নের বাংলাবাজার ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে গতিরোধ করে বেদার ও তার সহযোগীরা। এক পর্যায়ে ওই নারীকে টেনে তাদের ইজিবাইকে তুলে নেয়। তারপর দেশীয় অস্ত্রের ভয়-ভীতি দেখিয়ে ওই ইউনিয়নের চান্দের পাড়ার একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে বেদারসহ তিনজন ধর্ষণ করে। তখন তিনি চিৎকার ও কান্নাকাটি শুরু করলে তারা পালিয়ে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী শিক্ষিকার স্বজনরা বলেন, বছরখানেক আগে তার বিয়ে হয়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় শিক্ষিকার। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা পরিবারের লোকজন জানার পর থানায় যোগাযোগ করা হয়। প্রথমে রামু থানা, সেখান থেকে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় যান তারা। পরে সোমবার (২২ আগস্ট) রাতে মামলা নেয় কক্সবাজার সদর মডেল থানা।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগী নারীর এজাহার পাওয়ার পর মামলা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে মাঠে কাজ করছে পুলিশের একাধিক টিম।
সাইদুল ফরহাদ/আরআই