রাজশাহীতে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন বিষয়ক কর্মশালা

রাজশাহী নগরীতে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন বিষয়ক বিভাগীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এবং বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় এই কর্মশালা আয়োজন করে।
এই আয়োজনে কারিগরি সহযোগিতা দেয় এফএসটিআইপি অ্যাকটিভিটি, উইনরক ইন্টারন্যাশনাল ও ইনসিডিন বাংলাদেশ।
বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহর সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম মুখলেছুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল আবু হাসান মোহাম্মদ তারিক, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন এবং বেসরকারি সংস্থা উইনরক প্রতিনিধি লিজ বেলথ।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কে এম মুখলেছুর রহমান বলেন, মানবপাচার প্রতিরোধে আমরা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের পর্যবেক্ষণে রয়েছি। আমরা যদি এ ক্ষেত্রে অর্জন দেখাতে না পারি, তাহলে আমাদের দেশের যে সমস্ত শ্রমিক বিদেশে যাচ্ছেন তারা ভুক্তভোগী হতে পারেন।
মানবপাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের মানবপাচার বিষয়ক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয় টায়ারে অবস্থান করছে। আগে দ্বিতীয় টায়ারের ওয়াচ লিস্ট এ ছিল, যেটা অনেক খারাপ অবস্থান এবং তৃতীয় টায়ার হচ্ছে সর্বনিম্ন অবস্থা ।
প্রধান অতিথি বলেন, আমাদের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো মাইগ্রেশনের প্রধান স্টেকহোল্ডার। তাদের মধ্যে কিছু কিছু দুষ্টু প্রকৃতির রয়েছে। তারা এক কাজের কথা বলে নিয়ে অন্য কাজ করায়। এটা হচ্ছে আধুনিক দাস প্রথা। এটা প্রতিরোধে আমাদের কমিউনিটিতে যারা কাজ করে তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে। জনপ্রতিনিধিরা জানে কারা মানব পাচারের সঙ্গে যুক্ত।
সরকার ভিকটিমদের ডাটাবেজ আপডেট করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যতগুলো কেস রিপোর্ট হচ্ছে তার সবগুলোই কিন্তু মানবপাচার নয়। বৈধ পথে অনেকে বিদেশ যাচ্ছেন, কিন্তু তিনি যেখানে গেছেন সেখানে তার কাজের কোনো যোগ্যতাই নেই। তিনি ফিরে এসে অভিযোগ করছেন, আমাকে যে কাজের জন্য নেওয়া হয়েছিল সেই কাজ দেওয়া হয়নি। মানবপাচার প্রতিরোধে তিনি সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
কর্মশালায় রাজশাহী বিভাগীয় এবং বিভিন্ন জেলার জেলা পর্যায়ের সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, ৫ বছর মেয়াদী মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন বিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৮ সালে শুরু হয়ে ২০২২ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সরকার এর মেয়াদ আরও ৩ বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সাল পর্যন্ত করেছে। এ কর্মশালার উদ্দেশ্য হচ্ছে কর্মপরিকল্পনায় উল্লেখিত কার্যক্রমের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন ও হালনাগাদকরণ।
আরআই