পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য দারোগার পেছনে ঘুরতে হবে না

বিদেশ যেতে পুলিশের ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে অবশেষে ভোগান্তির অবসান হলো বরিশালে। মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্যোগে চালু হলো ওয়ান স্টপ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্ভিস। এই সার্ভিসের আওতায় আবেদনের মাত্র ৭ দিনের মধ্যে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পৌঁছে যাবে প্রার্থীর কাছে।
বুধবার (৩১ আগস্ট) দুপুর ১২টায় মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তরে এসব তথ্য জানান বিএমপির কমিশনার সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মানুষ যেন সহজে ক্লিয়ারেন্স পায়, সরকার নির্ধারিত ৫০০ টাকার অতিরিক্ত টাকা যেন সেবা গ্রহিতার খরচ করতে না হয় এ জন্যই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করে কোনো দারোগার পেছনে ঘুরতে হবে না। প্রার্থী আবেদন করার পর যদি তিনি ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার যোগ্য না হন, তবে সেটা আমরা জানিয়ে দিব।
আর যদি যোগ্য হন তাহলে তদন্তের জন্য কারও দ্বারস্থ হতে হবে না। আমার পুলিশ যেখানে তদন্ত দরকার তা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিসহ সর্বোচ্চ ৭ দিনের মধ্যে ক্লিয়ারেন্স পৌঁছে দিবে।
তিনি আরও বলেন, আগে যেখানে বিদেশগামী বা বিদেশে পড়ালেখার জন্য শিক্ষার্থীদের বেলায় সংশ্লিষ্ট থানার পাশাপাশি এই প্রত্যয়ন পত্রের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যন্ত যেতে হতো, এখন আর তা প্রয়োজন হবে না। কেবল বিদেশগামী বা শিক্ষার্থীদের বেলায় নয়, পুলিশের সব ধরনের প্রত্যয়ন পত্রের জন্য পুলিশ কমিশনার অফিসের নীচতলায় একটি অফিস খোলা হয়েছে। যেখানে ব্যাংক ফি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে সেবা গ্রহীতা তার প্রত্যয়ন পত্র পাবেন।
বিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ কর্তৃক জনগণকে পদত্ত এক ধরণের সেবা। সাধারণত চাকরি বা উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশ গমণের ক্ষেত্রে ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়। অনেক সময় অপরাধীরা দেশে গুরুতর কোনো অপরাধ করে বিদেশে পালিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের মাধ্যমে তা নিশ্চিত হওয়া যায়। বিদেশ গমনে ইচ্ছুক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো মামলা চলমান আছে কি না, পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের মাধ্যমে তা জানা যায়।
এই কর্মকর্তা বলেন, সাধারণত দেখা যায় কেউ বিদেশ যাওয়ার সব কাজ ঠিক করেছেন বা বিদেশ থেকে ছুটিতে দেশে এসেছেন। তার সঙ্গে কেউ শত্রুতা করে থানায় মামলা করে দেন, যেন ওই ব্যক্তির বিদেশ যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে সেই মামলার যথার্থতা যাচাইয়ের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ক্লিয়ারেন্সের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিব। আর আবেদনকারী প্রার্থী নিজেও জানতে পারবেন না কে আসলে তার ফাইল তদন্ত করছেন।
ফলে পুলিশ সদস্যরা অনিয়মের আশ্রয়ও নিতে পারবেন না। এ ছাড়া সেবা নিতে আসলে সেবা গ্রহিতার কাছ থেকে যদি পুলিশ কোনো সুবিধা নেয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে আমি নিজে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আশা করি এই অঞ্চলের মানুষের জন্য বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এই উদ্যোগ একটি যুগান্তকারী উদ্যোগে পরিণত হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত কমিশনার সঞ্জয় কুন্ড, মো. এনামুল হক, উপ-পুলিশ কমিশনার মো. নজরুল হোসেন, জুলফিকার আলী হায়দার, খান মুহাম্মদ আবু নাসের, রুনা লায়লা।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরআই