ঘের পাড়ে সাম্মাম ফল চাষে কৃষকের চমক

Dhaka Post Desk

জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ

০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:৩৯ এএম


অডিও শুনুন

থাইল্যান্ডের বাঙ্গি জাতের ফল সাম্মাম পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন গোপালগঞ্জের কৃষক অবনি মন্ডল। কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে তিনি ঘের পাড়ে মাত্র ৭০টি গাছ লাগিয়ে সফল হয়েছেন। আগামীতে আরও বেশি জমিতে সাম্মাম চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, বাংলাদেশের মাটিতে নতুন করে আবাদ হচ্ছে সাম্মাম। তবে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে এটি রকমেলন, সুইটমেলন, মাস্কমেলন, হানি ডিউ নামেও পরিচিতি। ফলটির বাইরের অংশ হলুদ এবং ভেতরের অংশ লাল। তবে খেতে খুবই মিষ্টি ও সুস্বাদু।

আরও জানা গেছে, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক অবনি মন্ডল। প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি ঘেরে মাছ চাষ ও ঘের পাড়ে বিভিন্ন সবজি চাষ করে থাকেন। কিন্তু এ বছর তিনি পরীক্ষমূলকভাবে থাইল্যান্ডের বাঙ্গি জাতের ফল সাম্মাম চাষ করেছেন। আর তাতেই মিলেছে সফলতা।

Dhaka post

চলতি বছরের মে মাসে বাজার থেকে মাত্র ৫০০ টাকার বীজ কেনেন। পঁচা কচুরিপানার মাধ্যমে বীজ থেকে চারা বের করে ১৫ দিনের মাথায় ঘেরের দুই পাড়ে ৭০টি গাছ রোপণ করেন তিনি। এরপর ৩০ দিনেই প্রতিটি গাছে ফল আসতে শুরু করে। ৪৫ দিনে প্রতিটি ফলের ওজন হয় দেড় থেকে দুই কেজি। প্রতিটি ফল কেজি দরে বিক্রি করছেন ১০০-১২০ টাকা। এ পর্যন্ত ১৫ হাজার টাকার ফল বিক্রি করেছেন। আরও পাঁচ হাজার টাকার ফল বিক্রি করবেন।

কৃষক অবনি মন্ডল ঢাকা পোস্টকে বলেন, নাতিকে নিয়ে গোপালগঞ্জ বাজারে গিয়েছিলাম। সেখানে নাতি সাম্মাম ফল দেখে খেতে চায়। পরে ১৬০ টাকা দিয়ে একটি সাম্মাম ফল কিনি। ওই দিন এই ফল দেখে চাষ করার ইচ্ছা জাগে। পরে কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে ঘেরে চাষ করি। ৪৫ দিনেই প্রতিটি ফল কেজি দরে ১০০-১২০ করে বিক্রি করেছি। খুবই লাভজনক একটা ফসল। আগামীতে আরও বেশি জমিতে চাষ করব।

Dhaka post

কৃষক অবনি মন্ডলের ছেলে সুশান্ত মন্ডল ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাম্মাম ফল চাষের প্রথম থেকেই আমি বাবার সঙ্গে থেকে সাহায্য করছি। ভালো ফলনও পেয়েছি। কৃষি অফিস থেকেও অনেক সহযোগিতা ও পরামর্শ পেয়েছি। আগামীতে আরও বেশি জমিতে চাষ করার ইচ্ছা আছে।

গোপালগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, অবনি মন্ডলকে সাম্মাম চাষে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছি। খোঁজ-খবর নিয়েছি নিয়মিত। অবনি মন্ডল এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেই সফল হয়েছেন। আশা করি আগামীতে আরও বেশি জমিতে এই ফল চাষ করবেন তিনি।

গোপালগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অরবিন্দ কুমার রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাম্মাম হচ্ছে থাইল্যান্ডের বাঙ্গি ফলেরই একটি জাত। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে এটিকে রকমেলন, সুইটমেলন, মাস্কমেলন, হানি ডিউ নামে জানে। এটি অল্প দিনে স্বল্প খরচের খুব লাভজনক একটা ফসল। বাণিজ্যিকভাবে চাষে কৃষকরা খুবই লাভবান হবেন বলে আমি মনে করি। আমি আশপাশের কৃষকদের আহ্বান জানাব সাম্মাম চাষে আগ্রহী হওয়ার জন্য।

এসপি

Link copied