হারাগাছে ভোটযুদ্ধ শুরু, মেয়র হতে লড়ছেন চারজন

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটারগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
সকাল থেকে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ২০ কেন্দ্রে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। এখানে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
হারাগাছ পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র হাকিবুর রহমান মাস্টার (নৌকা), বিএনপির মোনায়েম হোসেন ফারুক (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জাহিদ হোসেন (হাতপাখা) এবং আওয়ামী লীগ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী এরশাদুল হক এরশাদ (নারকেল গাছ)।
তবে এক সময়ের দুর্গখ্যাত রংপুরের হারাগাছে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী না থাকা আর আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধে বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে বিএনপি। গত নির্বাচনে এক হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যাওয়া বিএনপির প্রার্থী এবার জয়ের মালা গলায় নিতে মরিয়া হয়ে আছেন। যদিও আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী নিজের জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।
শ্রমিক অধ্যুষিত বিড়ি শিল্পনগরী খ্যাত হারাগাছ পৌরসভায় এবার ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর (পুরুষ) পদে ৪৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে মোট ভোটার ৪৯ হাজার ১৭ জন। এর মধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যা ২৫ হাজার ৩২৪ এবং পুরুষ ভোটার ২৩ হাজার ৬৯৩ জন।
ভোটগ্রহণ ঘিরে কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রার্থী, কর্মী এবং সমর্থকদের সরগরম উপস্থিতি দেখা গেছে। প্রার্থীরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও ভোটাররা বলেছেন, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সৎ, যোগ্য, শিক্ষিত ও অভিজ্ঞ প্রার্থীকেই ভোট দিবেন তারা। প্রথমবার ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিয়ে কারো মধ্যে কোনো দ্বিধাবোধ নেই। সচেতন ভোটাররা নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ধরে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মেয়র পদে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস দিয়ে তরুণ ভোটার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভোট আসলে সবাই হামার খোঁজ করে। ভোট শ্যাষ তো সবার দেকা সাক্ষাতও শ্যাষ। এ্যালা যে কয়জন মেয়র হবার চাওছে, ওমার সবার অবস্থা ভালো। মুই মোর পছন্দ মত ভোটটা দিচু। কোনো সমস্যা হয় নাই।
মেহেদী হাসান সুমন নামে আরেক ভোটার বলেন, ছোট পরিসরের এই পৌর এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন, মাদক নিয়ন্ত্রণ করাসহ পরিকল্পিত উন্নয়ন যার মাধ্যমে হবে, তাকেই পৌরবাসী নির্বাচিত করবে। তবে মূল লড়াইয়ে নৌকা ও ধানের শীষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত এরশাদুর হক এরশাদ। আগেই বলা যাচ্ছে না, কে মেয়র হবেন?
এ ব্যাপারে রংপুরের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে স্বতস্ফূর্তভাবে ভোট দিচ্ছেন। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চার স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৯ জন আনসার সদস্য ও ৬ জন পুলিশ সদস্য রয়েছে।
এছাড়াও পুরো নির্বাচনী এলাকায় ২ প্লাটুন বিজিবি, পুলিশের তিনটি স্টাইকিং ফোর্স, ৬টি মোবাইল টিম, র্যাবের তিনটি টিম মোতায়েন রয়েছে। একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টহলে রয়েছেন বলে জানান ওই নির্বাচন কর্মকর্তা।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এসপি