রংপুরে চিনিকল চালুর দাবিতে হরতালের ডাক

বন্ধ চিনিকল চালুসহ পাঁচ দফা দাবিতে আগামীকাল বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) রংপুরের শ্যামপুর এলাকায় আধাবেলা হরতালের ডাক দিয়েছেন চিনিকল শ্রমিক ও আখচাষিরা। মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লয়িস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বুলু আমিন।
আখ মাড়াই মৌসুমে শ্যামপুর চিনিকলসহ বন্ধ ছয়টি চিনিকল খুলে মাড়াই কার্যক্রম চালুর দাবিতে এই কর্মসূচি দিয়েছে শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লয়িস ইউনিয়ন এবং আখচাষি কল্যাণ সমিতি।
শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লয়িস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বুলু আমীন বলেন, ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ৯টি চালু হলেও এখনও ৬টি বন্ধ রয়েছে। তার মধ্যে শ্যামপুর চিনিকল একটি। অবিলম্বে এটি চালু করে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধসহ পাঁচ দফা দাবি আদায় না হলে ২৪ ডিসেম্বর থেকে রেলপথ, রাজপথ অবরোধসহ আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।
এর আগে গত ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর চিনিকল খুলে দেয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান ও সমাবেশ করেছে আখচাষি এবং শ্রমিকরা।
রংপুর জেলার একমাত্র ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্যামপুর চিনিকল। ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই চিনিকল দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে জাতীয়করণ করেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে চিনিকলটির অংশিদারিত্ব রয়েছে। চিনিকলটিতে হাজারো শ্রমিক, কর্মচারী, কর্মকর্তা চাকরির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।
শ্যামপুর চিনিকল আখচাষি কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান সাগর বলেন, ৮ থেকে ১০ হাজার আখচাষি অর্থকারী ফসল আখ চাষ করে আর্থিক সচ্ছলতা পেয়েছেন। চিনিকলের ওপর নির্ভর করে অনেকের সংসার চলে। শ্যামপুর চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীরা ৪-৫ মাসের বেতন ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অবসরে যাওয়া শ্রমিক-কর্মচারীরা অবসরকালীন গ্র্যাচুইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকাও পাননি। আমাদের অবস্থাও খারাপ। তারপরও মায়ের মতো আমরা এই চিনিকলকে আগলে রেখেছি।
শ্যামপুর চিনিকল এমপ্লয়িস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বুলু আমীন জানান, বর্তমানে শ্যামপুর চিনিকলসহ স্থগিত ৬টি চিনিকলেই আখ মাড়াই কাৰ্যক্রম যথাযথভাবে পরিচালনার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মিল চালানোর প্রয়োজনীয় প্রায় সকল ব্যয় নির্বাহ করা হয়েছে। এই সময়ে শ্যামপুর চিনিকলের মাড়াই বন্ধ রেখে এর আওতায় উৎপাদিত আখ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জয়পুরহাট চিনিকলে মাড়াই করলে অতিরিক্ত আরও ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা খরচ বাড়বে। সেক্ষেত্রে লোকসান কমানোর যে উদ্দেশ্যে মিল বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাতে লোকসান আরও বাড়বে।
প্রসঙ্গত, গত ১ ডিসেম্বর দেশের ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ছয়টি চিনিকলের মাড়াই বন্ধ রেখে ৯টি চিনিকলের মাড়াই চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন। লোকসান কমানোর উদ্দ্যেশ্যে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আরএআর