টানা বৃষ্টি ও জোয়ারে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ঠ লঘুচাপ ও পূর্ণিমা তিথির প্রভাবে তিন দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে। টানা বৃষ্টি ও জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে জেলার নিম্নাঞ্চল। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন উপজেলার অন্তত শতাধিক গ্রাম। এছাড়া সাগর উত্তাল থাকায় ট্রলার নিয়ে জেলেরা নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে সাগরে লঘুচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে সৃষ্ট অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। রোববার ও সোমবার দুপুরের জোয়ারে করমজল পর্যটন কেন্দ্রসহ বনের অধিকাংশ এলাকা তিন থেকে সাড়ে তিন ফুট পানিতে প্লাবিত হয়। মঙ্গলবারও কিছু এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বাগেরহাট পৌর শহরের রাহাতের মোড়, সাধনার মোড়, পূর্ব বাসাবাটি, কেবিবাজারের পেছনে, পুরাতন বাজার ভূমি অফিসের সামনে, শালতলা-প্রেসক্লাব রোড, সদর থানার সামনে, টোলপ্লাজা থেকে বাসাবাটি সড়ক, মালোপাড়া, বাগেরহাট মাছ ও কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সদর উপজেলার মাঝিডাঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্প, চরগ্রাম, বিষ্ণুপুরসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কচুয়া উপজেলার ভান্ডারখোলা, নরেন্দ্রপুর, প্রতাপপুর, সাংদিয়া, আফরাসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে মোরেলগঞ্জের প্রধান বাজার, উপজেলা পরিষদের অফিস চত্বর, তেলিগাতি, হোগলাপাশা, ফুলহাতাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেক মানুষ। এছাড়া রামপাল, মোংলা, শরণখোলা উপজেলার বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মাঝিডাঙ্গা এলাকার বরকত শেখ বলেন, ভৈরবে বেড়িবাঁধ না থাকায় আমাদের এই দুরবস্থা। রাস্তার ওপরও পানি ওঠে গেছে। রাস্তার কয়েক জায়গা ধসে গেছে।
গাওখালী এলাকার গৃহিণী রিক্তা বৈরাগী বলেন, বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে সব তলিয়ে গেছে। চুলা ডুবে যাওয়ায় রান্নাও বন্ধ রয়েছে।
মালোপাড়া এলাকার মো. শহিদ বলেন, প্রতি পূর্ণিমা ও অমাবস্যার জোয়ারে স্লুইসগেট থেকে পানি এসে আমাদের এলাকা প্লাবিত হয়। এসব স্লুইসগেট নষ্ট থাকায় প্রতিনিয়ত আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ অমরেশ চন্দ্র ঢালী বলেন, বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি উড়িষ্যা উপকূল ও বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে দুই-একদিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। নদ-নদীগুলোতে জোয়ারের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট পানি বেশি হতে পারে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, পূর্ণিমার জোয়ার ও টানা বৃষ্টিতে বেশ কিছু এলাকায় পানি উঠেছে। তবে এতে কোনো মানুষ বা প্রাণির ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলাকায় খোঁজ-খবর রাখছেন। কোথাও সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তানজীম আহমেদ/এসপি