আ.লীগ নেতার বাড়িতে খুনের পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন করেন ভাতিজা

পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুরে আওয়ামী লীগ নেতা সাইদার মালিথাকে হত্যার পরিকল্পনা হয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলাউদ্দিন মালিথার বাড়িতে। হত্যার সেই মিশনের দায়িত্ব পান আলাউদ্দিনের ভাতিজা আনোয়ার আহম্মেদ স্বপন। নির্দেশনা পেয়েই লোকজন নিয়ে নিজেই সাইদারকে গুলি করেন স্বপন। হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা স্বপনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় হত্যাকাণ্ডের ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমব তথ্য জানান পাবনার পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল ) মো. রোকনুজ্জামান সরকারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- হেমায়েতপুর ইউনিয়নের গাফুরিয়াবাদ গ্রামের মো. আশরাফ উদ্দিন মালিথার ছেলে আনোয়ার আহম্মেদ স্বপন (৪২), পাবনা শহরের চক ছাতিয়ানির মৃত কালাম মালিথার ছেলে মোহাম্মদ আশিক মালিথা (২৮), কাশিপুরের মো. শাজাহান খানের ছেলে মো. রিপন খান (২৭), মাটি সড়ক গোপালপুরের আকবার হোসেনের ছেলে মো. নুরুজ্জামান রাকিব (২৪), একই এলাকার মো. রমজান আলীর ছেলে মো. ইয়াসিন আরাফাত ইস্তি (২৬ ও চক ছাতিয়ানির মৃত আব্দুল হাকিম মালিথার ছেলে মোহাম্মদ আলিফ মালিথা (২২)।

পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির সাহায্যে জেলা পুলিশ, সদর থানা ও ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযানে কক্সবাজার, ঢাকা, সিরাজগঞ্জ ও পাবনার বিভিন্ন স্থান থেকে কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারী ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বিদেশি পিস্তল, গুলি, টিপ চাকু, দুই মোটরসাইকেল ও পাঁচটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম জানান, চাচাতো ভাই সাইদার মালিথার সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথার। নির্বাচন পরবর্তীতে সেই বিরোধ কঠোর রূপ ধারণ করে। তাদের মধ্যে একাধিকবার ছোটখাটো মারামারির ঘটনাও ঘটে। এই বিরোধে সাইদারকে জীবনের মতো শেষ করার পরিকল্পনা করেন হেমায়েতপুরের ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথা। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চেয়ারম্যানের বাড়িতে বৈঠক হয় এবং হত্যাকাণ্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : পাবনায় আ.লীগ নেতাকে গুলি করে খুন
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আসামিরা প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। তাদেরকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমাণ্ডে নেওয়া হবে। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারিগরকে খুব শিগগিরিই গ্রেপ্তার করা হবে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চর বাঙাবাড়িয়ার নজুর মোড়ে চা খাচ্ছিলেন সাইদার মালিথা (৫০)। এ সময় ৬-৭ জন সন্ত্রাসী তাকে ঘিরে ধরে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে।
নিহত সাইদার মালিথা হেমায়েতপুরের চর প্রতাপপুর কাবলিপাড়ার মৃত হারান মালিথার ছেলে। তিনি পাবনা পৌর আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য।
রাকিব হাসনাত/আরএআর