গ্যাস সংকটের কারণে চিনির উৎপাদন কমেছে

Dhaka Post Desk

জেলা প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

২২ অক্টোবর ২০২২, ০৯:২৯ পিএম


গ্যাস সংকটের কারণে চিনির উৎপাদন কমেছে

চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে দিনব্যাপী চিনি কারখানার উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা তদারকি করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বাজারে অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় সংস্থাটি দেশের বৃহৎ তিনটি চিনি উৎপাদনকারী শিল্প কারখানায় পরিদর্শন করেন। 

এসময় চিনির উৎপাদন সক্ষমতাসহ উৎপাদিত চিনির পরিমাণ ও বিপণন নিরিক্ষা করে দেখা যায় কারখানাভেদে উৎপাদন কমেছে ত্রিশ থেকে চল্লিশ শতাংশ।

শনিবার (২২ অক্টোবর) দিনব্যাপী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মেঘনাঘাট এলাকায় মেঘনা শিল্পনগরীতে অবিস্থিত মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ চিনি কারখানা, আব্দুল মোনায়েম গ্রুপের ইগলু চিনির কারখানা এবং রুপগঞ্জের রূপসীতে সিটি গ্রুপের তীর চিনির কারখানায় পরিদর্শন করে তদারিক কার্যক্রম পরিচালনা করে ভোক্তা অধিকার।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ হাসানউজ্জামান ও ভোক্তা অধিকারের ঢাকা বিভাগীয় সহকারী পরিচালক মাহফুর রহমান নেতৃত্বে একটি টিম এই তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। 

এসময় তারা কারখানাগুলোতে চিনির উৎপাদন সক্ষমতা এবং প্রতিদিন কি পরিমান চিনি উৎপাদিত হচ্ছে, সেই সাথে প্রতিদিন মিল গেট থেকে কত চিনি বাজারজাত করা হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করেন। একই সাথে কানখানায় যে চিনি উৎপাদন হচ্ছে সেই হারে বাজারজাত করা হচ্ছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হয়। একই সাথে সরকার নির্ধরিত মিল রেট ও মোড়কে মুদ্রিত মূল্য ঠিক আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

কারখানার উৎপাদন প্রসঙ্গে মেঘনা গ্রুপের ফ্রেস চিনি কারখানার চিফ অপারেশন অফিসার এম এ বাকের জানান, ফ্রেস চিনির কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা আছে তিন হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকায় প্রতিদিন প্রায় এক হাজার মেট্রিক টন চিনি কম উৎপাদন হচ্ছে। মিলে চিনি উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থায় কোনো ত্রুটি নেই। আমাদের মিলে সরকার নির্ধারিত মূল্যেই চিনি বিক্রি হচ্ছে। তবে চিনি নিয়ে কোনো সমস্যা দেখা কিংবা বাজারে অস্থিরতা দেখা দিলে ডিলার এবং রিটেইলাররা মিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।  

আব্দুল মোনেম সুগার রিফাইনারি লিমিটেডের বিপণন বিভাগের ব্যবস্থাপক মাসুদ আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, কারাখানায় উৎপাদন সক্ষমতা আছে আটশ মেট্রিক টনের মতো। কিন্তু গ্যাস সরবরাহ কম থাকায় প্রতিদিন এক থেকে দেশ মেট্রিক টন চিনি কম উৎপাদন হচ্ছে। যে পরিমাণ চিনি কম উৎপাদন হচ্ছে তাতে বাজারে অস্থিরতা দেখা দেওয়ার মতো না। তাদের উৎপাদন ও সরবরাহে কোনো সমস্যা নেই। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত চিনি মজুত করে এমন কৃত্রিম সংকট তৈরি করে থাকতে পারে। আমাদের উৎপাদিত চিনি দেশের বিভিন্ন কর্পোরেট হাউজগুলো নিয়ে থাকে। খোলা বাজারে আমাদের চিনি খুব কম যায়।

জ্বালানি সংকট ও গ্যাসের চাপ কম থাকায় চিনির উৎপাদন কম হচ্ছে জানিয়ে মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রত্যেকটি কারখানায় তাদের উৎপাদন সক্ষমতারে চেয়ে কম চিনি উৎপাদিত হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে তারা যুক্তি দেখিয়েছেন জ্বালানি সংকট ও গ্যাসের প্রেসার কম থাকার বিষয়টি। এছাড়াও সরকার থেকে নির্ধারণ করা মিল রেট ও সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ঠিক আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হয়েছে। ঠিক কতভাগ উৎপাদন কমেছে তার প্রকৃত সংখ্যা এখনি বলা যাচ্ছে না। তবে কারখানা ভেদে ৩০-৪৫ শতাংশ উৎপাদন সক্ষমতার চেয়ে কম হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার প্যাকেটজাত চিনির সর্বোচ্চ খুচরা দর পচানব্বই টাকা ও পঞ্চাশ কেজির বস্তার দর নব্বই টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। আমরা কারখানা পরিদর্শন করে মূল্য নিয়ে কোনো ধরনের অসঙ্গতি দেখতে পাইনি। তবে গ্যাস সংকটের কারণে চিনির উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া তেমন কোনো অসঙ্গতি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আবির শিকদার/এমএএস

Link copied