এলেঙ্গা-বঙ্গবন্ধু সেতু চার লেন প্রকল্প, কাজ শেষে কমবে ভোগান্তি
উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণাঞ্চলের একাংশের মানুষের চলাচলের প্রবেশপথ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। এই মহাসড়কটির চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেনের সুবিধা পেলেও দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও ভোগান্তি পোহাতে হতো এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব ১৩ কিলোমিটার দুই লেনের মহাসড়কে। তবে ভোগান্তি কমাতে ১৩ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত হচ্ছে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে আব্দুল মোনেম লিমিটেড নামে বাংলাদেশের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কটির দক্ষিণ পাশেই কাজ শুরু হয়েছে। দিনরাত পাইপযোগে সড়ক নির্মাণের জন্য ফেলা হচ্ছে বালু মাটি। এখন পর্যন্ত মহাসড়কের একভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তবে দ্রুত এই অংশের কাজ শেষ করার দাবি চালক ও যাত্রীদের।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প ফেইজ ২ এর অধীনে এলেঙ্গা-বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব মহাসড়কের চার লেন প্রকল্পে ১৩.৬ কিমি মহাসড়কে ১টি ফ্লাইওভার, ৮টি ব্রিজ, ১০টি কালভার্ট ও ২টি আন্ডারপাসসহ একটি সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হবে। এ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০১ কোটি টাকা। প্যাকেজ-৫ এর অধীন কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে।
জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের পর থেকে উত্তরবঙ্গের ১৭টিসহ মোট ২৩টি জেলার গাড়ি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে চলাচল শুরু করে। এতে মহাসড়কে গাড়ির চাপ ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। গাড়ির তুলনায় মহাসড়কটি সম্প্রসারণ না থাকায় প্রতিদিনই যানজটসহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণ দিতে হতো যাত্রী ও চালকদের। বিশেষ করে ঈদে ভোগান্তি বেড়ে যায় বহুগুণে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্প হাতে নেয়।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারলেও বর্তমানে মহাসড়কের পুরো কাজই শেষ হয়েছে। ফলে মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত কোনো প্রকার ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না। অন্যদিকে সড়ক দুর্ঘটনাও কমে গেছে। তবে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পর্যন্ত দুই লেনের মহাসড়কে এখনও ভোগান্তি রয়েছে। প্রায় প্রতিনিয়তই যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন। ফলে এসব ভোগান্তির অবসান করতে সরকার নতুন করে আবারও এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৩. ৬ কিমি রাস্তা প্রায় ৬০১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ লেনসহ এসএমভিটি (সার্ভিস লেন) করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
ইতোমধ্যে চার লেন প্রকল্পে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেড। আগামী ২০২৪ সালে জুন মাসে কাজটি শেষ করার কথা রয়েছে। প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাবে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ২৩ জেলার মানুষ।
মহাসড়কের চালকরা জানান, কাজটি দ্রুত শেষ করা হলে ঈদকেন্দ্রিক মহাসড়কে ভোগান্তি থাকবে না। সেইসঙ্গে দুর্ঘটনাও কমে যাবে।
মহাসড়কের এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহুরুল হক বলেন, গাজীপুরের ভোগড়া পর্যন্ত ৪ লেন প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ায় যাত্রী ভোগান্তি ও সড়ক দুর্ঘটনা কমে গেছে। দ্বিতীয় ফেইজের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব পর্যন্ত চার লেনের কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হলে আর কোনো ভোগান্তি থাকবে না। কমবে দুর্ঘটনা এবং সেইসঙ্গে ভোগান্তি নিরসন হবে।
এলেঙ্গা-বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব চার লেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আহসান মাসুদ বাপ্পী বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে মহাসড়কের চার লেনের কাজ শেষ করার আশা করছি। মহাসড়ক নির্মাণ কাজের ব্যয় বাড়বে কি না সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত পয়েন্ট ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। মূল কাজ শুরু হতে আরও সময় লাগবে।
এসপি