২৬ ঘণ্টা পর কুষ্টিয়ার সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

কুষ্টিয়ায় মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে রেলের ট্রলির সংঘর্ষে লাইনচ্যুত পাঁচ বগি উদ্ধার ও রেললাইনের মেরামতকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ২৬ ঘণ্টা পর কুষ্টিয়ার সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলো।
ইতোমধ্যে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী, রাজবাড়ী-খুলনা ও ফরিদপুর-রাজশাহীসহ বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এখন থেকে রুটিন অনুযায়ী ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকবে বলে জানিয়েছেন পাকশী রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী বীরবল মণ্ডল।
শনিবার (৬ মার্চ) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে লাইনচ্যুত বগিগুলো উদ্ধার ও রেললাইনের মেরামতকাজ সম্পন্ন হয়।
শুক্রবার (৫ মার্চ) বেলা দেড়টার দিকে শহরের মিলপাড়া এলাকায় গমবাহী ট্রেনের সঙ্গে রেলের ট্রলির সংঘর্ষ হয়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে গমবাহী ট্রেনের পাঁচ বগি লাইনচ্যুত হয় এবং ট্রলি দুমড়েমুচড়ে যায়। ট্রেনের ধীরগতি থাকায় বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। মালবাহী ট্রেনটিতে ২২টি বগি গমবোঝাই ছিল। এটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে ফরিদপুরে যাচ্ছিল।
শুক্রবার বিকেল ৫টায় ঈশ্বরদী থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন এসে লাইনচ্যুত বগিগুলো উদ্ধারের কাজ শুরু করে। শতাধিক কর্মীর ২৬ ঘণ্টা চেষ্টার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ দুর্ঘটনার কারণে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী ও রাজশাহী-টুঙ্গিপাড়া রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এ ঘটনায় পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী আশীষ কুমার মণ্ডলকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য চার সদস্য হলেন পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী বীরবল মণ্ডল, পাকশী বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী এস এম রাজিব বিল্লাহ এবং পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ড্যান্ট রেজওয়ান উর রহমান।
এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে রেলওয়ের পার্মানেন্ট ওয়ে ইন্সপেক্টর (পিডিবিআই) সাইফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মোহাম্মদ শাহীদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কুষ্টিয়ার স্টেশন মাস্টার এম এ জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বগি উদ্ধার ও মেরামতকাজ শেষে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও পাকশী রেলওয়ে পরিবহন বিভাগীয় প্রকৌশলী আশীষ কুমার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ট্রেন ও ট্রলির সংঘর্ষে ট্রেনের পাঁচ বগি লাইনচ্যুত হয়েছিল। বগিগুলো সরিয়ে খালি জায়গায় রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনায় শতাধিক ফুট রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত লাইন সরিয়ে নতুন লাইন লাগানো হয়েছে। যে কারণে মেরামত করতে বেশি সময় লেগেছে। মেরামত ও উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন রেলপথটি নিরাপদ। আগের মতো স্বাভাবিকভাবে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
পাকশী রেল বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী বীরবল মণ্ডল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার তারা সরেজমিনে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছেন। রেলওয়ের নিয়মানুযায়ী তদন্ত রিপোর্ট নেওয়া হবে।
রাজু আহমেদ/এএম/এনএ